মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে নিজের সুরক্ষা আমাদের নিজেদের কাছেই। আমি যদি নিজে সচেতন না হই, তাহলে প্রশাসন বা সরকার একা এই করোনা মোকাবিলা করতে পারবে না। নিজের দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। যে হারে দিন দিন সংক্রমণের হার বাড়ছে, আমরা যদি নিজেরা সচেতন না হই, তাহলে সরকার একা তা প্রতিরোধ করতে পারবে না। আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাইরে বেরোলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বেরোনো যাবে না। যেখানে-সেখানে থুথু ফেলা যাবে না। হাঁচি-কাশি দিলে টিস্যু বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘করোনা নিয়ে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত হব না। মনোবল হারাব না। নিজ নিজ ধর্ম পালন করে যাব। মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগি করবে। অন্য ধর্মের লোকেরা নিজেদের আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলবে। এতে মানসিক মনোবল বৃদ্ধি পায়। এগুলোও আমাদের জন্য সহায়ক। অনেকেই টেনশন সামাজিক অস্থিরতায় ভুগছেন। এটাকে যতটুকু এরিয়ে চলা যায়, সেই চেষ্টা করে যেতে হবে।’ তিনি বলেন, ছোট বাচ্চারা অনেকেই আজ ঘরে থাকতে চায় না। তারা অস্থির হয়ে পড়েছে। ঘরে তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে রাখতে হবে। ঘরেই তাদের কম্পিউটার, বই পড়ানো বা খেলাধুলা করার ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চাদের মারধর বা বকাবকি করা যাবে না। কারণ তারা এ মুহূর্তে যা চায় তা পাচ্ছে না। এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। নতুনভাবে লকডাউন প্রসঙ্গে বিশিষ্ট এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বলেন, সরকার সারা দেশে লকডাউন দিয়েছে। তা মানতে চাইছে না মানুষ। তাই এখন এলাকাভিত্তিক লকডাউন দেওয়া হচ্ছে। কত দিন মানুষকে বন্দী করে রাখা যায়! মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থেই এলাকাভিত্তিক লকডাউনের পথে হাঁটছে সরকার। পুরো দেশ লকডাউন দিলে পুরো দেশ অচল হয়ে যাবে। এতে অর্থনীতি আরও হুমকির মুখে পড়বে। এর ফল কয়েক দিন পর পাওয়া যাবে। এতে ফল পাওয়া গেলে এভাবেই চলবে। নইলে বিকল্প কিছু ভাবতে হবে। মানুষ যাতে মানে সে জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা চালাতে হবে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাজে লাগাতে হবে। জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমামসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে এ লকডাউন কার্যকর করতে হবে। মানুষের খাওয়াদাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। করোনার ভ্যাকসিন বা টিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ নিয়ে অনেক সংস্থা বা কোম্পানি কাজ করছে। কেউ বলছে জুনে, কেউ বলছে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টিকা বা ভ্যাকসিন চলে আসবে। না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। এখন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এর আগে আমাদের নিজেদেরই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।