বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে বাংলাদেশি জামিলা ও জয়

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

নিউইয়র্ক স্টেটে কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট, স্টেট সিনেট, অ্যাসেম্বলি, কমিটিম্যান, কাউন্টি লিডারসহ বিভিন্ন পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচন (প্রাইমারি) ২৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে বেশ কজন বাংলাদেশিও মাঠে রয়েছেন। করোনাভাইরাসের তা-বে এ নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিলেন স্টেট গভর্নর। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা আদালতে যাওয়ার হুমকি দিলে ভোট গ্রহণের তারিখ অটুট রাখা হয়। নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৪-এ লড়ছেন জয় চৌধুরী। প্রথম প্রজন্মের তরুণ অভিবাসী হিসেবে নিজের অবস্থান মোটামুটি দৃঢ় করেছেন ভিন্ন ভাষা-বর্ণের মানুষের মধ্যে। এটিই তার সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করেছে। জ্যাকসন হাইটস, উডসাইড, ইস্ট এলমহার্স্ট ও করোনা এলাকা নিয়ে গঠিত এই ডিস্ট্রিক্টে ভোটারের সিংহভাগ হলেন হিসপ্যানিক, নেপালি, চীনা। খুবই কম সংখ্যায় রয়েছেন বাংলাদেশি ও ভারতীয়। দীর্ঘদিন নানাভাবে সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপের সন্তান জয় চৌধুরীর তৎপরতা ইতিমধ্যে সবার মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। অন্যদিকে, স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-২৪-এর কমিটিওম্যান পদে মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জামিলা আকতার উদ্দিন। জ্যামাইকা স্টেট, অবোর্নডেল, হলিস, বেলরোজ, ডোগলাস্টন, লিটলনেক, গ্লেন ওউকস, ফ্লোরাল পার্ক ও ব্যা সাইড নিয়ে গঠিত এ নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশি, ভারতীয়, জ্যামাইকান, চীনা ও শ্বেতাঙ্গের আধিক্য রয়েছে। ব্রঙ্কসে জন্মগ্রহণকারী শ্রমিক ইউনিয়ন লিডার মাফ মিসবাহ উদ্দিন এবং কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মাজেদা এ উদ্দিন দম্পতির মেয়ে জামিলা পার্কচেস্টারে ১০৬ পাবলিক স্কুল হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের জন জে কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশনের পর এমবিএ (আরবান প্ল্যানিং) করেছেন ব্রুকলিন কলেজ থেকে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরই ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামার ইয়ুথ কো-অর্ডিনেটর, ২০১৩ সালে সিটি মেয়র নির্বাচনে জন ল্যুর সাউথ এশিয়ান ডিরেক্টর, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের ফিল্ড ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছেন জামিলা। বর্তমানে তিনি কুইন্স অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৩৫-এর অ্যাসেম্বলিম্যান জেফ অব্রের ক্যাম্পেইন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৯ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নিউইয়র্ক সিটির ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালনকালে সব ভাষা-বর্ণ-গোত্রের মানুষের সঙ্গে চমৎকার একটি সম্পর্ক গড়ে উঠেছে সাংগঠনিকভাবে অভিজ্ঞ জামিলার। তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে কুইন্স কাউন্টি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। দুই বছর মেয়াদি এ পদে জয়ী হতে পারলে জামিলাকে এই স্টেটের দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যয়ভার মনিটরিং করতে হবে। একই সঙ্গে দলের সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক সুসংহত করার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির মেম্বার বাছাই করতে হবে। এ ছাড়া দলের পক্ষ থেকে যোগ্য প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার কাজটিও করতে হবে নিরবচ্ছিন্নভাবে।

প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার প্রার্থী হিসেবে জামিলাকে ইতিমধ্যে ‘অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান-আমেরিকান লেবার’ তথা আসালের পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চলমান ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের একজন সক্রিয় সংগঠক হিসেবে জামিলার পরিচিতি আরও বেড়েছে। এ জন্য তার নির্বাচনী এলাকার অপর পদসমূহে সম্ভাবনাময় প্রার্থীর সবাই জোট বেঁধেছেন ভোট প্রার্থনার প্রচারণায়। এদিকে কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট-৬-এর কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে চলেছেন। তার বিরুদ্ধে দলীয় কেউ মাঠে নামেননি। ৩ নভেম্বরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই বাংলাদেশিদের প্রিয় এই কংগ্রেসওম্যান পঞ্চম মেয়াদের জন্য শপথ নেবেন। প্রাইমারিতে বিজয়ীরা চূড়ান্ত ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন ৩ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের দিন। ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর