শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

সব জিনিসের দাম বাড়তি বেড়েছে চালের দামও

নিজস্ব প্রতিবেদক

সব জিনিসের দাম বাড়তি  বেড়েছে চালের দামও

বাজার দর

মহামারী করোনাভাইরাসের সঙ্গে বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে আবারও নতুন করে বাড়ছে চাল, ডাল, পিয়াজ, শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। রাজধানীতে জোনভিত্তিক লকডাউন ঘোষণার পরপরই বাড়ছে পণ্যমূল্য। নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য কিনতে গিয়ে কাঁচাবাজারগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ রেলগেট, মগবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, খিলগাঁও, খিলগাঁও মৈত্রী মাঠের কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- চাল, ডাল, পিয়াজ, রসুনের সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। আলু, পটোল, বেগুন বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙ্গা, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে। বাড়তি রয়েছে ডিম ও মুরগির বাজার। ডিমে ডজন প্রতি ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে। কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের মুরগি। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে মাছের দাম। মাছের ভিন্নতা ও আকারভেদে কেজিতে ১০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে দাম।

এদিকে বোরো মৌসুমের ধান কাটা শেষ হওয়ায় চারদিকে চালের এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু বাজারে স্বস্তি নেই। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর পাইকারি বাজারে চালের দাম এক দফা বেড়েছিল। তার প্রভাব এখন পড়েছে খুচরা বাজারে। করোনা ভাইরাসের সঙ্গে গত কয়েক দিনের বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে বিক্রেতারা সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়েছেন। মোটা চালের দাম ৩৮ টাকা থেকে প্রতিকেজিতে ৭ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগে ছিল ৩৪ থেকে ৩৬ টাকার মধ্যে। ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। চিকন চালের দাম বেড়ে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬২ টাকা, যা আগে ছিল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকার মধ্যে। এ প্রসঙ্গে মালিবাগের বাসিন্দা আলী আহমেদ বলেন, কিছুদিন আগে নতুন ধান উঠেছে। এরপরও বেড়েছে চালের দাম। সরকারি পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বাজারে চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ, মসলা, মুরগিসহ ১৬টি পণ্যের দামে পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টি পণ্যের, বাকি ছয়টির কমেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি তুলে নেওয়ার পর থেকেই সবজির দাম বাড়তে থাকে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক সবজির কেজি ১০০ টাকাও ছুঁয়েছে। সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের সময়ে সবজির চাহিদা কম ছিল। এখন চাহিদা বেড়েছে। আবার বৃষ্টির কারণে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হওয়ায় দাম বাড়ছে। বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। বাজার ভেদে বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। সে হিসেবে সবজির চড়া বাজারে বরবটির দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে। চিচিংগার কেজি বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে, ঝিঙা ও পটোল ৫০-৬০ টাকা, করলা ৫০-৭০ টাকা, কচুরলতি ৪০-৬০ টাকা, কচুর মুখী ৬০-৭০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি। এদিকে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, গরু ও খাসির মাংস। বয়লার মুরগির কেজি ১৬০- ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা। পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৬০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা। পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দামও কিছুটা বেড়েছে। দেশি পিয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১০০-১২০ টাকার মধ্যে ছিল।  আদার দাম বেড়ে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০- ১৫০ টাকার মধ্যে। মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০, পাঙাশ ১৪০-১৮০, শিং ৩০০-৪৫০, শোল মাছ ৪০০-৭৫০, পাবদা ৪৫০-৬০০, বোয়াল ৫০০-৮০০, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর