রবিবার, ২১ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ

অনাবাদি পদ্মার চরে চীনা বাদাম চাষ করে এ বছরও ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর চরাঞ্চলের চাষিরা। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চরে বাদাম চাষ করে সাফল্যের অর্থ ঘরে তুলেছেন তারা। এ ফসল চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে দরিদ্র চরবাসির। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ক্ষতিকর তামাক চাষ না করে অর্থকরী বাদাম চাষে আরও বেশি আগ্রহী হবেন তারা। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, কৃষাণ-কৃষাণিরা খেত থেকে এখন বাদাম তোলায় ব্যস্ত। চাষিরা জানান, পদ্মা নদীর বুকজুড়ে এক সময় মাইলের পর মাইল ধুঁ-ধু বালু ছিল। যা চরবাসীদের কোনো কাজেই আসত না। কিন্তু কয়েক বছর আগে স্বল্প পরিসরে চাষিরা চিনা বাদামের চাষ শুরু করেন। তারা সাফল্য পাওয়ায় ক্রমান্বয়ে লাভজনক এ অর্থকরী ফসলের চাষ পুরো চরে ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে প্রায় ৮৮৫ হেক্টর জমিতে চীনা বাদামের চাষ হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সময় প্রবল বৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও বাদামের ফলন এবার একটু কম হয়েছে। এরপরও বেশির ভাগ কৃষক বিঘাপ্রতি ছয় থেকে আট মণ হারে ফলন পেয়েছেন। দুই হাজার ৬০ টাকা মণ বিক্রয় করে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হওয়ায় দরিদ্র চাষিদের সংসারে সুদিন ফিরেছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাদাম চাষি আফতাব উদ্দিন বলেন, তিনি এবার ছয় বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। যে জমি এক সময় কোনো কাজেই আসত না, সেই জমিতে বাদাম ফলিয়ে তিনি অনেক লাভবান হচ্ছেন। সোনাতলা গ্রামের কৃষক মহিদুল ইসলাম এবার বাদাম চাষ করেছিলেন সাত বিঘা জমিতে। তিনি প্রায় ৫০ মণ বাদাম ঘরে তুলেছেন। বাদাম খেতে কাজ করে দিনমজুররাও চরম খুশি। তারাও বাদাম খেতে কাজ করে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা আয় করছেন। বাদামের ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও খুশি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ায় এ বছর বাদাম চাষে ভালো ফলন হয়েছে। তামাক চাষে অনাগ্রহী করতে আর চরের অনাবাদি জমি বাদাম চাষের আওতায় যাতে আনা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম কামরুজ্জামান। দৌলতপুরের পদ্মারচরে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে কোনো ফসল হয় না। এসব জমি বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে একদিকে যেমন চরের দরিদ্র কৃষকদের মুখে হাসি ফুটানো সম্ভব হবে, অপরদিকে অর্থকরী ফসল বাদাম চাষ করে সারা বছরের আর্থিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর