বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
জেনারেল পর্যায়ে বৈঠকে ঐকমত্য

ভারত ও চীন সংঘর্ষ এড়িয়ে চলবে

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সংঘর্ষের পরে সোমবার দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে জেনারেল পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। একটি সূত্রে খবর, দুই দেশের সেনাকর্তারাই একমত হয়েছেন যে, ভবিষ্যতে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলবেন। গালওয়ান উপত্যকা এবং আরও যেসব এলাকায় সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে, সেখানে কীভাবে সংঘর্ষ এড়ানো যায়, তা নিয়ে উভয় তরফে কথা হয়েছে। দুই দেশের সেনাকর্তারাই গঠনমূলক প্রস্তাব দিয়েছেন। ইতিবাচক ও হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে উভয় পক্ষই আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।

চীন সীমান্তের ওপারে চুশুল অঞ্চলের মলডো এলাকায় দুই পক্ষের লেফটেন্যান্ট জেনারেলরা আলোচনায় বসেন। এর আগে ৬ জুন উভয় দেশের সেনাকর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। সেবারও সীমান্তে উত্তেজনা কমানো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তারপর চীন সেনা সরিয়ে নেয়। ভারতও সেনাবাহিনীকে সরিয়ে আনে। এদিকে গতকালই ভারতের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটির বৈঠক ডাকেন এবং সীমান্তে সংঘর্ষের জন্য মোদি সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি এও অভিযোগ করেন, মোদি সরকার ভারতের মর্যাদা বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছেন। গতকালই এই প্রথম ভারত-চীন-রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিলিত হন, বৈঠক আয়োজন করেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েতের বিজয়ের পঁচাত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে। এই বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ভারতীয় চিকিৎসক ডা. কোটনিসের অবদানের কথা স্মারণ করিয়ে দিলেও তিনি নাম না করে চীনের সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করেন। বলেন, ‘নিজেদের যারা বড় মনে করেন, তাদের আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত এবং তা মেনে চলে আসা উচিত।’ ১৫ জুন রাতে দুই তরফের সেনা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৭ সালের পরে দুই দেশের মধ্যে এত বড় সংঘর্ষ কখনো হয়নি। সেদিন ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হন। আহত হন ৭৬ জন। চীনারা কাঁটা লাগানো রড ও পাথর নিয়ে ভারতীয়দের ওপর হামলা চালায়। সেনা সূত্রে খবর, চীনেরও ৪৫ জন হতাহত হয়েছে। একটি সূত্রে জানা যায়, ভারত লাদাখে একটি রাস্তা তৈরি শুরু করার পরেই চীন সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেয়। গত কয়েক মাস ধরে চীন সীমান্তে রাস্তা ও বিমান ঘাঁটি বানানোর ওপরে জোর দিয়েছে ভারত। চীন সীমান্তের ওপরে পরিকাঠামো যথেষ্ট উন্নত। ভারত তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিকাঠামো বানানো শুরু করতেই চীনারা ক্ষুব্ধ হয়। সম্প্রতি চীন সীমান্তের কাছে দারবুক থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি পর্যন্ত একটি ফিডার রোড তৈরি করেছে ভারত। এর ফলে গালওয়ান উপত্যকায় যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে। ওই অঞ্চলে আরও কয়েকটি রাস্তা বানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্ডার ম্যানেজমেন্ট দফতরের এক উচ্চপদস্থ অফিসার বলেন, ওই অঞ্চলে আরও ৩২টি রাস্তা তৈরির কথা আছে। ২০১৯ সালের মধ্যেই রাস্তাগুলো তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে দেরি হয়েছে। দ্রুত রাস্তাগুলো তৈরি করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম ও উত্তরাখন্ডে খুব দ্রুত দুটি রাস্তা তৈরি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর