বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

রিজার্ভ রেকর্ড ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের মহামারীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা সংকটে থাকা সত্ত্বেও রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে সরকার কর্তৃক নগদ দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল দিনের শুরুতেই বাংলাদেশের রিজার্ভ তিন হাজার ৫০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। প্রতি মাসের আমদানি ব্যয় বাবদ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ ধরলে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। যা ব্যালেন্স অব পেমেন্টের জন্য ইতিবাচক হিসেবে কাজ করে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও প্রবাসীরা  দেশে থাকা স্বজনদের জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন। এর সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার অংশ হিসেবে আইএমএফের ৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের জরুরি সহায়তার অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজাভে যোগ হয় গত ৩ জুন। সেদিন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। মাত্র  তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সেই রিজার্ভ বেড়ে এবার ৩৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করল। যা দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত সন্তোষজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৫  সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার, সেটা ছিল তৎকালীন রেকর্ড। এরপর গত আড়াই বছরে রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে। এবারাই প্রথম ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সম্প্রতি সরকার যে দুই শতাংশ নগদ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে এবং হুন্ডি প্রতিরোধে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে  সেটার জন্যই প্রবাসীরা এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি উৎসাহ দেখাচ্ছেন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জানা গেছে, চলতি জুন মাসের ২২ দিনে ১৩৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের এ পর্যন্ত (২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ২২ জুন) প্রবাসী আয় দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। সরকার ঘোষিত প্রণোদনার সুবিধা পেতে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশ নিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

 

সর্বশেষ খবর