শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা
রোকনুরের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত বসুন্ধরার পণ্যবাহী জাহাজ

১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে জিডি

ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার মেঘনা নদীতে পণ্যবাহী লাইটার জাহাজ রোকনুর-১৯-এর ধাক্কায় বসুন্ধরা গ্রুপের পণ্যবাহী এমভি এস এ বাশার জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটিকে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে একটি ডুবোচরে নোঙর করিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের মাস্টার ইউসুফ আলী ভোলার দৌলতখান থানায় পণ্য ও জাহাজের মোট ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যবাহী জাহাজ এমভি এস এ বাশার চৌকিঘাটা এলাকা থেকে কিছুটা দূরে নদীতে ডুবোচরে কাত হয়ে আছে। শতাধিক শ্রমিক ওই জাহাজ থেকে গম নামাচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে দৌলতখান উপজেলার চৌকিঘাটা ও রামগতি উপজেলার সেলিম বাজারের মধ্যবর্তী মেঘনায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে এমভি এস এ বাশারের বরাবর বড় ধরনের ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং জাহাজে থাকা ১ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন গমে পানি প্রবেশ করে। ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের মাস্টার ও কর্মীরা জানান, দুর্ঘটনার পর আঘাতকারী জাহাজ এমভি রোকনুর-১৯-কে দাঁড়াতে বলা হলে তারা না দাঁড়িয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় নোঙর করে রাখা রোকনুর-৭ নামের অন্য একটি খালি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত এমভি এস এ বাশার জাহাজটিকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। বুধবার বিকাল থেকে গতকাল বিকাল ৫টায় এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ থেকে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন গম উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের মাস্টার ইউসুফ আলী জানান, এমভি ইএল মাটাদর নামক মাদার ভেসেল থেকে ১ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন গম নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ভাড়া করা ইরা করপোরেশনের এমভি এস এ বাশার কার্গো জাহাজটি ঢাকায় যাচ্ছিল। চৌকিঘাট এলাকার মাঝামাঝি পৌঁছলে অবৈধভাবে ওভারটেকিং করতে গিয়ে রোকনুর-১৯ সজোরে এসে ধাক্কা দিলে এমভি এস এ বাশারের মাঝখানের হেজ ফুটো হয়ে গমের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ে। পরে দ্রুত জাহাজটিকে দৌলতখান উপজেলার চৌকিঘাটা এলাকার একটি ডুবোচরে নিয়ে নোঙর করা হয়। মাস্টার ইউসুফ আলী বলেন, ভোলার উপকূলবর্তী মেঘনার ওই রুটে বিআইডব্লিউটিএর কোনো ধরনের তদারকি নেই। তাই অধিকাংশ জাহাজের নাবিক নিয়ম মানেন না। তারা মনমতো জাহাজ চালান এবং দুর্ঘটনা ঘটান। তিনি জানান, রোকনুর-১৯ জাহাজটিও অবৈধভাবে এসে তার জাহাজকে আঘাত করে।

বিআইডব্লিউটিএর ভোলা বন্দর কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, কেবল যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোই বিআইডব্লিউটিএ তদারক করে থাকে। অচিরেই হয়তো পণ্যবাহী এসব লাইটারেজও বিআইডব্লিউটিএ তদারক করবে। তিনি বলেন, এ চ্যানেলটি অনেক স্থানে সরু। তাই অতি সাবধানে যাতায়াত করা উচিত। বসুন্ধরা গ্রুপের সুপারভাইজার উজির আলী জানান, এ ঘটনায় তারা ১৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয় হবে।

সর্বশেষ খবর