রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

বানভাসি বাড়ছে ১০ জেলায়

প্রতিদিন ডেস্ক

বানভাসি বাড়ছে ১০ জেলায়

টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে অন্তত পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবিটি গতকাল ফুলছড়ি বালাসিঘাট রোড থেকে তোলা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, রাজশাহী, জামালপুর, সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা বন্যায় তলিয়ে গেছে। জেলাগুলোর নদ-নদীতে হু হু করে পানি বাড়ছে। এতে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন জনপদ, বাড়ছে বানভাসি মানুষের সংখ্যা। গতকাল পর্যন্ত অন্তত দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

লালমনিরহাট : কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি ফের বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায়  ২৫ হাজার পরিবার। পানির তোড়ে দুই দিনে সদর উপজেলা অন্তত ২৬টি বসতভিটা চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙন দেখা দিয়েছে জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুন রাত থেকে বাড়তে থাকে তিস্তার পানিপ্রবাহ। পরে শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে রেকর্ড করা হয়। তবে গতকাল সকাল ৯টার দিকে পানি কমলেও বিকাল থেকে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে ধরলার পানি লালমনিরহাটের কুলাঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানায় পাউবো। স্থানীয়রা জানান, জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতিবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এদিকে গত তিন দিন থেকে তিস্তা ধরলার ৬৩ চরের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়লেও ত্রাণ সহায়তা পাননি বানভাসি মানুষ। নীলফামারী : উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের ২ হাজার ৯৪০টি পরিবার। বন্যায় ভাঙনের কারণে বসতবাড়িসহ চরের বাদাম খেত ও বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেপাখড়িবাড়ি  ইউনিয়নের পূর্বখড়িবাড়ির দিঘিরপাড়, চরখড়িবাড়ি, পশ্চিম টাপুর চর, পাগলীর বাজার, পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরশ্বর, ঝুনাগাছচাপানী ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত এলাকা ভেন্ডাবাড়ী, সাতুনামা, খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর, ছোটখাতা, খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিসামত ছাতনাই, দোহলপাড়া গ্রামে ২৯৪০টি পরিবারের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। গতকাল দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৮ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এসব নদ-নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৯ জেলার ২৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে প্রায় ৫ শতাধিক হেক্টর জমির আউশ ধান, আমন বীজতলা, পাট, ভুট্টা, কাউন, চিনা ও শাকসবজির খেত। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যার পানির তোড়ে যে কোনো মুহূর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ধসে চিলমারী উপজেলা সদরসহ নতুন বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। এদিকে চিলমারী, সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, রৌমারী ও রাজিবপুরের বিভিন্ন চরের পানিবন্দী অর্ধলক্ষাধিক মানুষ এখন চরম বিপাকে রয়েছেন। বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরযাত্রাপুর এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকেছে। গাইবান্ধা : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের বর্ষণে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি বৃদ্ধি আগামী চার দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ফলে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে চলে গেছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়ার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। এদিকে সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জের নদী বেষ্টিত চরগুলোর নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার বসতবাড়ির লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পাট, পটোল, কাঁচামরিচ ও শাক-সবজির খেতসহ সদ্য রোপণকৃত বীজতলা তলিয়ে গেছে। দিনাজপুর : কয়েকদিনের অবিরাম টানা বৃষ্টিতে দিনাজপুরের কয়েক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমির পাকা ধান ডুবে গেছে। এতে কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অনেক পুকুর ডুবে চাষির মাছ ভেসে গেছে। অপরদিকে বীরগঞ্জ উপজেলার ঢেপা সংযোগ নদীর পার্শ্ববর্তী কয়েক এলাকা ভাঙনের আশঙ্কা করেছেন এলাকাবাসী।  এক সপ্তাহের বৃষ্টির প্রভাবে বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউপির নাফানগর, টেনা, ছেনিহারী, পুটকিবাড়ী, ইশানিয়া ইউপির খানপুর, জিনর, বাড়েয়া, বর্থ, দকচাই, মুশিদহাট ইউপির হরিশচন্দ্রপুর, জালগাঁও, কড়ই, আটগাঁও ইউপির বাজনিয়া, হাটমাধবপুর, আলমপুর, দৌলা, কাকদুয়ার, ছাতইল ইউপির কোদালকাটি, সুকদেবপুর, পরমেশ্বরপুর, কুকুরাডাঙ্গি, নাড়ইল, রনগাঁও ইউপির ধনঞ্জয়জুর, বাসুদেবপুর, গোবিন্দপুর, বনগাঁওসহ পৌর এলাকার কয়েক স্থানের কৃষকের ধান ও ভুট্টা বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।  রাজশাহী : ধীরে ধীরে ফুলে-ফেঁপে উঠছে পদ্মা। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। উজান থেকে আসছে স্রোত। ফলে ডুবে গেছে চর। ঢেউ এখন আছড়ে পড়ছে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের হার্ডপয়েন্টে টি বাঁধের তলায়। গতকাল বিকাল ৩টায় বিপৎসীমার সাড়ে ৪ সেন্টিমিটারের নিচেই ছিল পানি। তবে এ নিয়ে আপাতত শঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, মূলত বৃষ্টির কারণেই পদ্মায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। সাধারণত অক্টোবর পর্যন্ত পানি বাড়তে থাকে। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার। তবে বিপৎসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার।  এখন পানি বাড়াকে স্বাভাবিক প্রবাহ হিসেবেই দেখছেন তিনি। এদিকে, জুন মাসের শুরু থেকেই পদ্মায় পানি বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিছেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডে গেজ রিডার এনামুল হক। তিনি বলেন, শনিবার দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানির প্রবাহ ছিল। বিকাল ৩টায় বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটারে। প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর পানির উচ্চতা মাপা হয়। প্রতিদিনের পানির প্রবাহ রেকর্ড রাখা হচ্ছে। তবে পানি নিয়ে এখনো উদ্বেগের কিছু নেই বলেও জানান তিনি। কারণ গেল ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে মাত্র দুবার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর আর এই রেকর্ড ভাঙেনি। জামালপুর : টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির ফলে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাচঞ্চল বন্যা প্লাবিত হয়েছে।

যমুনার নদীর পানি বেড়ে বিকালে বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি, পাথর্শী, নোয়ারপাড়া ও বেলগাছা এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গেল বছর বন্যায় বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়া সড়কের অংশ মেরামত না করায় এবারের বন্যায় সেই সব স্থান দিয়ে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সড়কে পানি উঠে পড়ায় ইসলামপুর-উলিয়া-মাহমুদপুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো বন্যা পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করবে তা নিয়ে দুশ্চিতায় পড়েছে।

বিশ্বনাথ (সিলেট) : ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন প্লাবিত এলাকার মানুষ। তলিয়ে গেছে পথঘাট, আউশ খেত, বীজতলা ও মাছের ঘের। বর্ষণ ও ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যার শঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।

সরেজমিন দেখা গেছে, সুরমা নদীর পানি বেড়ে ইতিমধ্যে উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা। কারও কারও ঘরে প্রবেশ করেছে পানি। গবাদি পশু নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষক। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে তলিয়ে যাবে পুরো গ্রাম। পানি ছুঁই ছুঁই্ করছে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাহতাবপুর, মাধবপুর, কাজীবাড়ি, রাজাপুর, তিলকপুর, হাজারীগাঁও, আকিলপুর, রসুলপুর ও সোনাপুরে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার কবলে এসব গ্রাম।  

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পহাড়ি ঢলে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলার প্রধান নদী সুরমার বিপৎসীমার ৪৭ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুই দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে ভারি বৃষ্টিপাত। সেই সঙ্গে বাড়ছে জেলার নদীর পানি।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের অনেক বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকাও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। শহরের নবীনগর, কাজিরপয়েন্ট, ষোলঘর, লঞ্চঘাট, তেঘরিয়াঘাট এলাকায় বন্যার পানিতে চলাচলের সড়ক তলিয়ে গেছে। অনেক দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। বিপাকে পড়েছেন নাগরিকরা। 

পানিতে জেলার দোয়ারাবাজার, সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ারপুর এলাকায় সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জেলা সদর থেকে হালুয়ারঘাট পর্যন্ত সড়কের বেশ কিছু জায়গা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর