রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

গভীর রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে নির্যাতন

অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে গভীর রাতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক ব্যক্তি ও তার মেয়েকে মারধর করতে করতে থানায় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কথিত ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করানোর নামে থানায় নিয়ে নির্যাতন করে তাদের দিয়ে লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে গভীর রাতে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ কিংবা কাউকে নির্যাতন করে থানায় নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। যদিও এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি পুলিশের কর্মকর্তারা। ভুক্তভোগীরা হলেন ওই উপজেলা সদরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরহোগলা গ্রামের আক্কাস বেপারী (৫০) ও তার মেয়ে সীমা (১৮)।

আক্কাস বেপারীর ছেলে আবদুর রহিম বেপারী জানান, ১৫ দিন আগে তার বোন প্রতিবেশী জুয়েল শাহ্র বাড়ি গেলে সেখানে সে তার হাত ধরে টানাটানি করে। বোনের মানসম্মান এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা দুই পক্ষ স্থানীয়ভাবে সমঝোতা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার দুপুরে থানার এসআই শহিদ স্থানীয় শালিসদার মো. ফিরোজ মাস্টারকে ফোন করে ওই ঘটনায় থানার খরচ বাবদ ১ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে সমঝোতা ভেঙে মামলা করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। রহিম বেপারী জানান, গত শুক্রবার রাতে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি মো. আবিদুর রহমান তার বাবাকে ফোন দিয়ে থানায় গিয়ে এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে বলেন। তার বাবা তাদের কোনো অভিযোগ নেই এবং থানায় অভিযোগ দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওসির নেতৃত্বে এসআই শহিদ এবং এএসআই অনিমেষসহ ৪ জন পুলিশ সাদা পোশাকে তাদের বাড়ি গিয়ে ডাকাডাকি করে। তারা রাতে দরজা খুলতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ঘরের ভিতরের আরেকটি দরজা ভেঙে তার বাবাকে আটক করে। এ সময় তারা তার বাবাকে মারধর করে তার বাবা এবং বোনকে ওই রাতেই থানায় নিয়ে যায়।

গতকাল সকালে আবদুর রহিম তার বাবা ও বোনের সঙ্গে দেখা করতে থানার সামনে গেলে তাকেও মারধর করে থানায় নিয়ে আটকে রাখে পুলিশ। পরে তার কাছ থেকেও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয় তারা। অপরদিকে তার বাবার কাছ থেকেও জোরপূর্বক অভিযোগে স্বাক্ষর আদায় করে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য আবদুর রহিমের।  মোবাইলফোনে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমান বলেন, স্থানীয় শালিসদারের কাছে এসআই শহিদের টাকা চাওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। মেয়েকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় আক্কাস বেপারী থানায় অভিযোগ দিয়েছে। মামলা রুজু করে পুলিশ ওই মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শেরেবাংলা মেডিকেলে পাঠিয়েছে। বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক বলেন, ওই গ্রামের একটি মেয়ে পাশের বাড়িতে কাজ করতে যেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে। এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার অবৈধ গর্ভপাত করা হয়। তারা ভয়ে মামলা করতে পারেনি। খবর পেয়ে পুলিশ ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে থানায় মামলা দায়ের হয়। ওই ব্যক্তির ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ কিংবা তাদের মারধর করে জোরপূর্বক অভিযোগ আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর