রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

উপসর্গ নিয়ে আরও ২৪ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল আরও ১২ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২ জনের করোনা পজিটিভ ছিল এবং ১০ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সব মিলিয়ে উপসর্গ নিয়ে ২৪ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় তিনজন, রাজশাহীতে একজন, মাদারীপুরে একজন, বরিশালে পাঁচজন, দিনাজপুরে একজন, গাজীপুরে একজন, পটুয়াখালীতে একজন ও কক্সবাজারে একজন মারা গেছেন। সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেকই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যু ১২ জনের :  ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শুক্রবার বিকাল থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন করোনা পজিটিভ। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- জাহানারা হাসান (৭২), জহুরুল (৪৫), মর্জিনা (৭৫), হামিদা (৫৫), হারুনুর রশিদ (৬৫), সাহারা বেগম (৭৫), জসিম উদ্দীন (৬৫), তোফাজ্জল (৮০), সুনিল মন্ডল (৬৯), আবদুর রহমান (৬৫), নুরুল ইসলাম (৬৫) ও লিজা (২৮)। জেলায় জেলায় ১৪ জনের মৃত্যু : আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনজন মারা গেছেন। কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- জেলার বুড়িচং উপজেলার বারবী মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন (৬০), সদর দক্ষিণের সেকান্দর মিয়ার ছেলে মোসলেম উদ্দিন (৬৫) এবং আদর্শ সদর উপজেলার বিবিরবাজার এলাকার ইকবাল মজুমদারের ছেলে তানভীর মজুমদার (৪০)।  রাজশাহীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আবদুর রাজ্জাক (৬৯)। তিনি রাজশাহী নগরীর ফুদকিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবার নাম মৃত আবু বকর সিদ্দিক। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। আবদুর রাজ্জাক জনতা ব্যাংকের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। মাদারীপুর শহরের পুরানবাজার এলাকায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সন্তোষ কর্মকার (৬২) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের পুরানবাজার এলাকার সন্তোষ কর্মকার কয়েক দিন ধরে জ¦ও, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার রাতের তার অবস্থার অবনতি হলে মাদারীপুর সদরে ভর্তি হন। পরে গভীর রাতে তিনি সদর হাসপাতালে মারা যান। বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে কভিড-১৯ এর উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বেলা ২টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে ওই পাঁচজন মারা যান। হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পাঁচ রোগীর অবস্থাই খুব খারাপ ছিল। মারা যাওয়ার পর তাদের নমুনা সংগ্রহ করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের করোনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে তারা করোনা পজিটিভ ছিলেন কি না। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বরিশালের উজিরপুরের এক ব্যক্তি (৫০) মারা যান। রাত সোয়া ৯টার দিকে বরিশাল নগরের এক নারী (৪৫) মারা যান। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে মারা যান বরিশাল নগরের এক ব্যক্তি (৪৫)। সন্ধ্যা ৬টার কিছু পরে মারা যান বরগুনার বামনা উপজেলার এক বৃদ্ধ (৮০) ও  শুক্রবার বেলা ২টার দিকে মারা যান বরিশাল নগরের এক বৃদ্ধ (৬৩)। জ্বরসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে দিনাজপুরের বিরামপুরে মো. দেলোয়ার হোসেন (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বিকালে বিরামপুর উপজেলার কসবা-সাগরপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা। গাজীপুরের শ্রীপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে ফিরোজ আল-মামুন (৪০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ফিরোজ উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মত্যু হয়। পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি হওয়ার পর পরই এক ব্যক্তি মারা গেছেন। পটুয়াখালী শহরের মাঝগ্রাম এলাকার ওই ব্যক্তির বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। গতকাল সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ আবদুল মতিন। কক্সবাজারের মহেশখালী পৌর এলাকায় জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গোলাম সরওয়ার (৬২) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত সোমবার তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কি না, জানতে নমুনা দেন। গতকাল পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর