বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সংক্রমণে ভয়াবহ ছিল জুন

তথ্য সংকটে নির্ধারণ হচ্ছে না পিকটাইম, ঈদ ঘিরে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

দেশে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে মৃত ও আক্রান্ত রোগীর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। গত ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর জুনে সংক্রমণ ছিল সবচেয়ে বেশি। করোনায় মৃত্যুও এই মাসে বেশি। তবে সঠিক তথ্যের অভাবে সংক্রমণের পিকটাইম নির্ধারণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জন। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৩৩০ জন। বাকি তিন মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ১৫৩ জন। এ পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৪৭ জন রোগী। এর মধ্যে জুনেই মারা গেছেন ১ হাজার ১৯৭ জন। বাকি তিন মাসে মারা গেছেন ৬৫০ জন। ল্যাবের সংখ্যা বাড়াও আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ঈদের কারণে রাজধানী থেকে গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। ঢাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকার বাইরেও প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। ঈদুল ফিতরে ঢাকা থেকে গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরেছে মানুষ। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরও একইভাবে রাজধানী ছেড়েছে মানুষ। এ ছাড়া লকডাউন না মেনে চলাচল করা, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রণ দ্রুত ছড়িয়েছে। এ ছাড়া ল্যাব বাড়ায় বেড়েছে শনাক্তের হারও। মে মাস পর্যন্ত ৫২টি ল্যাবে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। জুনে ল্যাব সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮টি। এক দিনে পরীক্ষা হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা। গত ৩১ মে ১১ হাজার ৮৭৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। প্রতি মাসেই সংক্রমণ বাড়ছে। তবে পিকটাইম অর্থাৎ সর্বোচ্চ সংক্রমণ নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। দেশে সংক্রমণের পিকটাইম কবে হতে পারে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ‘প্রজেকশনই’ হয়নি। জনস্বাস্থ্যবিদদের সমন্বয়ে গঠিত সরকারের করোনাবিষয়ক কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শাহ মুনির হোসেন বলেন, ‘সংক্রমণ উপরের দিকে যাচ্ছে, তবে পিকে আছি কিনা সেটা কেউ বলতে পারবে না। গত কয়েক দিনের রোগী শনাক্তের হার বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে আগামী ৮ থেকে ১৫ দিন এরকম চলতে পারে।’

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে রোগী বাড়তেই থাকবে বলেও মন্তব্য করেন শাহ মুনির। তিনি বলেন, ‘জুন মাসের প্রথমদিকে সংক্রমণ কমতে থাকে বলে মনে হলেও আজকের অবস্থা হয়েছে ঈদের ছুটির কারণে। আর এখন যদি কঠোর লকডাউন না করা হয়, স্বাস্থ্যবিধি না মানা হয় তাহলে সংক্রমণ আবার বাড়বে।’ তবে বাংলাদেশে কোনো ফর্মুলা মেনে পিকটাইম আসবে না বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির দিকে যাচ্ছি, দিনকে দিন সংক্রমণ বাড়ছে। আর এই সংক্রমণ এমনিতে বিদায় নেবে না। রোগীদের শনাক্ত করে তাদের আইসোলেশন করে সংক্রমণের বোঝা কমাতে হবে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ কমানোর জন্য অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর