বুধবার, ১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবা ভাই ও মামা হত্যা করল কিশোরীকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল ইউনিয়নের লম্বাহাটি গ্রামের কিশোরী লাইজু আক্তার (১৫) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী লাইজুর বাবা সনু মিয়া, ভাই আদম আলী ও মামা মাজু মিয়া তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। গত সোমবার রাতে জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। দ্রুত এ হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা। তার সঙ্গে ছিলেন নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন। এ ঘটনায় সনু মিয়া ও মাজু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া লাইজুর ভাই আদম এখনো পলাতক রয়েছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকত। গত ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটখেতে একজনের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেন মাজু মিয়া। বিষয়টি লাইজুর বাবা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মাজু। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হন সনু মিয়া। পরদিন (২৩ জুন) সকালে ঘরে বসে লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে সনু ও মাজু।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরিকল্পনা অনুযায়ী ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে লাইজুর বাবা সনু তাকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর লাইজুকে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন সনু ও মাজু। বাবা ও মামার সঙ্গে বোনের হত্যাকান্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মরদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, এক ছেলের সঙ্গে লাইজুর সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলের সঙ্গে লাইজুকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তার মামা মাজু মিয়া। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লাইজুর বাবা ও মামা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যাকান্ডে লাইজুর ভাইও সম্পৃক্ত রয়েছে। তবে সে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, লাইজুর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউই মামলা করতে রাজি হয়নি। এ ছাড়া লাইজুর জন্য পরিবারের কারও কোনো শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টার্গেট করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাবা ও ভাইয়ের সম্পৃক্ততার কথা বেরিয়ে আসে। এর আগে গত শনিবার দুপুরে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন লাইজুর মা সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর