বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

উপসর্গ নিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন জেলায় সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও ১৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ছয়জন, রাজশাহীতে দুজন, রাঙামাটিতে দুজন, নাটোরে একজন, চট্টগ্রামে একজন, মৌলভীবাজারে একজন, বরিশালে তিনজন, কুড়িগ্রামে একজন ও চুয়াডাঙ্গায় একজন মারা গেছেন। সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেককেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী- গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন এ তথ্য জানান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- চাঁদপুর শাহরাস্তির আমিনুল হক (৭৫), কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের জহির খান (৫০), একই এলাকার আবদুল করিম (৬০), আইসিইউতে মারা যান কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মফিজুর রহমান (৮০), চাঁদপুর শাহরাস্তির আবদুল করিম (৬৫) ও কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রামপুর গ্রামের মফিজুল ইসলাম (৬৫)। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মাসুদ রানা (৪৫) নামে এক কর্মচারী করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মাসুদ রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ল্যাব সহকারী ছিলেন। তিনি রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর এলাকার গাজিউর রহমানের ছেলে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে তিনি মারা যান। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে রাজশাহীতে সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মীর শওকত আলী (৬৩)। তিনি অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ছিলেন। কয়েক বছর আগে অবসর গ্রহণ করেন। রাজশাহী মহানগরীর হোসনীগঞ্জ এলাকায় তার বাড়ি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান। রাঙামাটিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে দুজনের।

তারা হলেন- সুরুত আলী (৩৫) ও অনিল দাশ (৬৫)। মঙ্গলবার রাতে রাঙামাটির পৃথক দুটি এলাকায় দুজনের মৃত্যু হয়। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া ঢাকা থেকে নাটোরে মামার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বিধান সরকার (৪৭) নামে এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাতে তেবাড়িয়া ইউনিয়নের জংলি এলাকায় মামা কার্তিক দাসের বাড়িতে তিনি মারা যান। করোনা উপসর্গ থাকায় স্বজনদের কেউ তার সৎকারে এগিয়ে না আসায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম তার সৎকারের ব্যবস্থা করেন। মৃত বিধান সরকার নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার দুলাল সরকারের ছেলে। চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন সিএমপির একজন সদস্য। আর মৌলভীবাজারের রাজনগরে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তি (৫৫) মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। গতকাল দুপুরে পারিবারিক কবরস্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাতের মধ্যে এই তিনজন মারা যান। হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এক ব্যক্তি (৪৫) মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে তিনি মারা যান। পৌনে পাঁচটার দিকে মারা যান বরগুনার বামনা উপজেলার এক ব্যক্তি (৬০)।  দুইটার দিকে মারা যান পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার এক ব্যক্তি (৬০)।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক গার্মেন্ট নারী কর্মীর (২২) মৃত্যু হয়েছে। তিনি গত দুই সপ্তাহ আগে গাজীপুর থেকে রৌমারীতে তার বাবার বাড়ি যান। গতকাল দুপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে তার মৃত্যু হয়। রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নের পাখিউড়া গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে তিনি। গাজীপুরের একটি গার্মেন্টে কাজ করতেন। গত দুই সপ্তাহ আগে সর্দি, জ¦র ও কাশি নিয়ে বাবার বাড়িতে যান এই নারী। করোনা উপসর্গ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি কাওছার আলী শাহর (৬৫) মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। কাওছার আলী শাহ দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন শাহর ছেলে।

সর্বশেষ খবর