শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের নতুন রেকর্ড

ব্রাজিলে মৃত্যু ৬০ হাজার, ভারতে আক্রান্ত ৬ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৫০ হাজার ২০৩ জন। এখন পর্যন্ত এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৩। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৮ জন। দেশটিতে এর মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮০ জন। তবে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭৫। গত ৩১ ডিসেম্বর  চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন পর্যন্ত করোনার হানায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। অন্য কোনো দেশ আক্রান্ত ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছেও নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু দেখেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যের করোনা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ফলে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন করে করোনার বিস্তার বাড়তে থাকায় কয়েকটি রাজ্যে বিধিনিষেধ শিথিলের পদক্ষেপ থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। বিভিন্ন বিচ, রেস্টুরেন্ট, বার, নাইট ক্লাবসহ অনেক প্রতিষ্ঠান আবারও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে করোনার বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরই নতুন করে দেশটিতে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, দেশটিতে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি হতে পারে।

এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরেই রয়েছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলেই আক্রান্ত ও মৃত্যু এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। প্রথমদিকে ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ না করায় দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দেশটিতে এর মধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ হাজার ৩৮ জন। ফলে এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজার ৬৩২ জনের। বুধবার দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪৬ হাজার ৭১২ জন। এদিকে, ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৬০ হাজার ৭১৩ জন। দেশটিতে ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ জন। সেখানে বর্তমানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯০টি। অপরদিকে এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ৮ হাজার ৩১৮ জন। ভারতেও করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে অধিকাংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও দিল্লির বাসিন্দা। এর মধ্যে মারা গেছে ১৭ হাজার ৮৪৮ জন। তবে ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৪২৮ জন এবং মারা গেছে ৪৩৮ জন। মহারাষ্ট্রে নতুন করে ৫ হাজার ৫৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে তামিলনাড়ুতে ৩ হাজার ৮৮২ জন এবং দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৪৪২ জন। ভারতে যত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে ৯০ শতাংশই মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা ও কর্নাটকের বাসিন্দা। দিল্লিতে অবশ্য সংক্রমণের হার আগের তুলনায় কমেছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন, বিশেষজ্ঞরা রাজধানীতে করোনা যে হারে ছড়াবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম সংক্রমণ হয়েছে।

সিঙ্গাপুরে করোনা মোকাবিলায় এবার ১৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবী : সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ১৭ হাজার ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে এগিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে ৬ হাজার ২০০ জন হলেন পেশাদার চিকিৎসক। যাদের মধ্যে দাঁতের চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট এবং সহযোগী স্বাস্থ্যসেবক রয়েছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য পেশা থেকে অবসর কিংবা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন এমন ব্যক্তিরা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে ৪ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী আগে থেকেই কাজ করেছিলেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হলো গোয়া সমুদ্রসৈকত : গতকাল থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গোয়া সমুদ্রসৈকত। তবে মেনে চলতে হবে কিছু শর্ত। ২৫০টি হোটেলকে কাজ শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ সৈকত শহরে এসে পর্যটকদের থাকতে কোনো সমস্যা হবে না। তবে কোনোভাবেই যেন সংক্রমণ না ছড়ায়, সেদিকেও কঠিন নজরদারি রাখা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। গোয়া সৈকত শহরে ভ্রমণে গেলে পর্যটককে দেখাতে হবে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। এটি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারলে কোনো ঝামেলাই থাকবে না। না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা জমা দিতে হবে প্রশাসনের কাছে। একান্তই যদি কেউ তা সংগ্রহ করতে না পারেন, তাহলে গোয়াতেই বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা করানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর