শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বেনাপোল বন্দরে অনির্দিষ্টকাল আমদানি রপ্তানি বন্ধ

বেনাপোল প্রতিনিধি

ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির দাবিতে বেনাপোল বন্দরে বুধবার সকাল থেকে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি পণ্য প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা সব পণ্যের আমদানি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য গ্রহণ না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এ পথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বলে অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন। নানা দেনদরবার শেষে কভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে বন্ধ থাকা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করতে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের স্থলবন্দরগুলো খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য প্রবেশ স্বাভাবিক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না ভারত। বিষয়টি দুই দেশের মধ্যকার চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সূত্র জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ৮০ দিন দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বন্ধ থাকায় উভয় দেশের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে প্রথমে উদ্যোগ নেয় ভারত। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি ও উন্নয়নে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক হয়। এ ছাড়া একাধিক ফোনকল ও ভার্চুয়াল বৈঠকে বাণিজ্য স্বাভাবিক করার বিষয়ে জোর দিতে থাকে ভারত। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক হয়। এসব  বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ জুন বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি শুরু করে ভারত। তবে বাংলাদেশি পণ্য দেশটিতে প্রবেশে বাধা পেতে থাকে। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল। স্থলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৭০ ভাগ সম্পাদিত হয়ে এ বন্দর দিয়ে। প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়। অন্যদিকে আমদানি হয় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার পণ্য। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় ২২ মার্চ থেকে স্থলপথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। রপ্তানিকারকদের দাবি, আড়াই মাসের অধিক এ পথে রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘৭ জুন থেকে বেনাপোল বন্দরে পুনরায় আমদানি কার্যকর হলেও ভারত বাংলাদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করছে না। ফলে ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। গত ২৪ দিনে বেনাপোল দিয়ে রেল ও সড়ক পথে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হলেও বাংলাদেশ থেকে এক ট্রাক পণ্যও ভারতে রপ্তানি হয়নি। আমরা বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের কথা চিন্তা করে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক গ্রহণ করলে দুই দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি বাণিজ্য শুরু হবে।’ বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, দুই দেশের মধ্যে আমদানি-বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানোসহ সব কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে।

সর্বশেষ খবর