শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
শিক্ষার্থীদের সনদ মালামাল ভাগাড়ে

ছাত্রাবাস মালিক রিমান্ডে বাড়িওয়ালা লাপাত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন মাসের ভাড়া না দেওয়ায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ ও মালামাল গায়েব করার মামলায় একজনকে এক দিন রিমান্ডে  নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গতকাল এই আদেশ দেন। আসামির নাম খোরশেদ আলম। তিনি ছাত্রাবাসের মালিক। ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফ সাফায়েত বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সনদ ও মালামাল গায়েব করার ঘটনায়  গ্রেফতার আসামি খোরশেদ আলমকে তিন দিন রিমান্ডে  নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে তাকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

একই থানায় করা অপর মামলায় বাড়িওয়ালাকে এখনো  গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে বাড়ির মালিক পলাতক। কলাবাগানের ৪/এ ওয়েস্টার্ন স্ট্রিটের একটি বাড়ির নিচতলায় মেসে থাকা আট শিক্ষার্থীর তিনটি কক্ষের তালা ভেঙে তাদের শিক্ষাসনদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনপত্র, বই-খাতাসহ যাবতীয় মালামাল ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেন বাড়িওয়ালা। যা আর পাওয়া যায়নি। মুজিবুল হক নামের ওই বাড়িওয়ালা একটি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা।

ছাত্রাবাসের মালিকের বিরুদ্ধে করা মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব রাজাবাজারে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ শিক্ষার্থী তিন মাসের ভাড়া না দেওয়ায় তাদের শিক্ষাসনদ ও মালামাল গায়েব করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে গত বুধবার গভীর রাতে পুলিশ  খোরশেদকে গ্রেফতার করে। গ্রিন রোডের বেসরকারি  সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ৫০ শিক্ষার্থী আলিফ নামের একটি ছাত্রাবাসে ভাড়া থাকতেন। এ জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিন বেলার থাকা-খাওয়ার খরচসহ সাড়ে চার হাজার টাকা দিতে হতো।  সোহান নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে তারা সব শিক্ষার্থী তাদের কক্ষে তালা লাগিয়ে বাড়িতে চলে যান। কিছুদিন আগে জানতে পারেন ছাত্রাবাস মালিক খোরশেদ আলম গত এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত তিন মাসের ভাড়া না  পেয়ে তাদের কক্ষ ভেঙে চেয়ার টেবিল, বই-খাতা, আসবাবপত্রসহ মালামাল সরিয়ে ফেলেছেন। গত বুধবার সকালে ৫০ শিক্ষার্থী সবাই ঢাকায় আসেন। তারা খোরশেদ আলমকে ফোন করলে তিনি এসে বলেন বকেয়া টাকা দিলে মালামাল দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের চাপে বুধবার রাতে যেখানে মালামাল রাখা হয়েছে, সেখানে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দেখতে পান, তাদের প্রত্যেকের স্যুটকেসের তালা ভাঙা। লেপ-তোষক ছাড়া,  কোনো মালপত্রই নেই। পরে রাত ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলাবাগান থানায় যান। সোহান জানান, স্যুটকেসে সব শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ ছিল।  লেপ-তোষক ছাড়া কোনো মালপত্রই তারা পাননি। তাদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন তারা দিশাহারা।

সর্বশেষ খবর