রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

দেশি শিল্প বাঁচলে ক্ষতি কম হবে

-আবদুল মাতলুব আহমাদ

দেশি শিল্প বাঁচলে ক্ষতি কম হবে

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্প সুরক্ষায় নজর দিতে হবে বলে মনে করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। নিটল-নিলয় গ্রুপের এ কর্ণধার বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশেও বড় বাজার আছে। অনেক পণ্যের চাহিদা আছে। দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্প ও কল-কারখানা বাঁচলে ক্ষতি অনেক কম হবে। এ জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ বা এসএমইতেও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার মতে, সবখানে অবস্থা ভয়ঙ্কর। উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অনেক কারখানা ছাঁটাই শুরু করেছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন আবদুল মাতলুব আহমাদ। তার মতে, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার যুদ্ধ বাংলাদেশের একার নয়, পুরো বিশ্বের। এ যুদ্ধে বিশ্বের মহাক্ষমতাধর দেশগুলোও সংকট উত্তরণে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাে  অনেক বেশি প্রভাব পড়ছে। সবখানে অবস্থা ভয়ঙ্কর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় অর্থনীতি অনেক বেশি শক্তিশালী। তারপরও তারা করোনার প্রভাব মোকাবিলা করতে পারছে না।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, ছোট-বড় সব স্তরের ব্যবসায়ীকে সাহায্য দেওয়ার। এমনকি প্রান্ত্রিক পর্যায়ে মানুষের সুরক্ষায় সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রি বা ওএমএস এবং ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছে। আমাদের রপ্তানি খাতের ক্রেতা দেশগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ফলে ক্রেতারা ক্রয়াদেশ বাতিল করেছেন। তাদের ক্ষতিপূরণেও সরকার অনেক চেষ্টা করছে। কিন্তু উৎপাদন ক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নগদ প্রণোদনার অর্থ প্রদানের পরও অনেক কারখানা ছাঁটাই শুরু করেছে।

আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্প সুরক্ষায় নজর দিতে হবে। রপ্তানি খাতের পাশাপাশি দেশীয় শিল্পের জন্য সব রকম সহায়তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশেও বড় বাজার আছে। অনেক পণ্যের চাহিদা আছে। দেশের উৎপাদনমুখী শিল্প ও কল-কারখানা বাঁচলে ক্ষতি অনেক কম হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ বা এসএমইতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে এসএমইদের ঋণ না দিয়ে অনুদান দিলে তারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ-আইবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের খাদ্য ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের যন্ত্রপাতি ও উপকরণে নজর দিতে হবে। দেশের নদী, নালা, খাল ও বিলে প্রবাস-ফেরত শ্রমিকদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানে যুক্ত করতে হবে। কৃষিতে নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে প্রবাস-ফেরত শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, এই শ্রমিকরা এত দিন আমাদের অর্থনীতির সুরক্ষা দিয়েছে তাদের শ্রম নিংড়ানো ঘামে অর্জিত রেমিটেন্স পাঠিয়ে। তারা এখন সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বেন। এ দুঃসময়ে তাদের পাশে থাকা আমাদের সবার এখন নৈতিক দায়িত্ব। এক কথায় দেশের সব জনসম্পদকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা এগিয়ে যাব।

আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, প্রণোদনার সব দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর ওপর ন্যস্ত হয়েছে। কিন্তু এ প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের সক্ষমতা আমাদের ব্যাংকগুলোর নেই। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আগে-ভাগে সম্পর্ক থাকা বড় বড় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলো সহায়তা পেলেও ছোটরা পাচ্ছে না। তবে ব্যাংকগুলোকে খুব একটা দোষারোপ না করে ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি দরকার। ব্যাংকগুলোতে জনগণের যে আমানত রয়েছে, তার নিশ্চিয়তার জন্য গ্যারান্টি দরকার। এতে প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঋণ সুবিধা পাবেন।

সর্বশেষ খবর