রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সিসিটিভির ফুটেজে মাস্ক চুরি শাহজালালে তোলপাড়

জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা : বেবিচক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিসিটিভির ফুটেজে বেরিয়ে আসে বিমানবন্দরে মাস্ক চুরির ঘটনা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঢাকা কাস্টম হাউসে কারা কীভাবে আমদানি করা মাস্ক চুরি করেছে, তার পুরোটাই রয়েছে সিসিটিভির ভিডিও রেকর্ডে। চিহ্নিত করা গেছে মাস্ক চোরদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, চাঞ্চল্যকর এ মাস্ক চুরির ঘটনার সঙ্গে বিমান এবং ঢাকা কাস্টমস হাউজের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজের মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। ঢাকা কাস্টমস হাউজে আমদানি করা মাস্ক চুরির এ ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে শাহাজালাল বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট মহলে। অপরদিকে আমদানিকারকরাও তাদের মালামাল নিয়ে এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান গত রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিমানবন্দরে তমা কনস্ট্রাকশনের আমদানি করা মাস্ক চুরির সঙ্গে জড়িত বিমান ও ঢাকা কাস্টমস হাউজের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে পুরো চুরির ঘটনাটি দেখা গেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিমান ও কাস্টমস সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা  গেছে, সম্প্রতি তমা গ্রুপ কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের জন্য বিদেশ থেকে তিন লাখ এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি কার্গো এলাকায় তমা গ্রুপের আমদানি করা পণ্যের (এন-৯৫ মাস্ক) চালানের কিছু পণ্য চুরি হয়ে যায়। এতে করে তমা গ্রুপের আমদানি করা মাস্ক কেন্দ্রীয় ওষুধাগারে জমা দেওয়ার পর গননায় তিন প্যাকেট কম ধরা পড়ে। চুরির কারণে মাস্ক কম হওয়ার এ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নিয়ে একটি মহল স্বাস্থ্য খাতে মাস্ক কেলেংকারি ও অনিয়ম-দুর্নীতি বলে অপপ্রচার করতে থাকে। সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নানামুখী সমালোচনার মুখে পড়ে তমা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি জানিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপ। এর পর তদন্তে নামে বেবিচক। তদন্তে নেমে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসে। মাস্ক চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ বিমান ও ঢাকা কাস্টম হাউজের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, তাদের অপকর্মের কারণে দেশের শীর্ষ স্থানীয় তমা গ্রুপের দীর্ঘদিনের সুমান ক্ষুণœ হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের এক কর্মকর্তা জানান, মাস্ক চুরির ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি  হলে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নির্দেশে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সপ্তাহব্যাপী তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। প্রতিবেদনে উঠে আসে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরের চুরির সঙ্গে জড়িতদের নামের তালিকা। তিনি আরও বলেন, মাস্ক চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের কার্গো শাখা ও ঢাকা কাস্টমস হাউজের অসাধু বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। যা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় আমাদের মাস্কগুলো বিমান বন্দর থেকে খোয়া গেছে। যারা এমন চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।

সর্বশেষ খবর