শিরোনাম
সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

মুক্ত পরিবেশে ফিরছে ইউরোপ ভয়াবহ লাতিন আমেরিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্ত পরিবেশে ফিরছে ইউরোপ ভয়াবহ লাতিন আমেরিকা

করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় তিন মাস পর প্রথমবারের মতো রাতে বাইরে থাকার সুযোগ পেয়েছে ইংল্যান্ডবাসী। কঠোর সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে শনিবার পানশালা, রেস্তোরাঁর পাশাপাশি সেলুন, সিনেমা হল ও থিম পার্কগুলো খোলা হয়। ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে যে কেউ এখন ভাবতে পারেন- তিনি হাজির হয়েছেন অন্য কোনো দুনিয়ায়, যেখানে করোনাভাইরাস বলতে কোনো কিছু ছিল না!

বিবিসি জানিয়েছে, লকডাউন শিথিল হওয়ার পর এই দিন প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বাসিন্দারা রাতে বাড়ির বাইরে থাকার অনুমতি পান। ক্যাম্পসাইট ও ছুটি উদযাপনের স্থানগুলোও ফের খোলা হয়। ঘর থেকে বের হওয়া লোকজনের স্রোতে রাস্তাগুলোতে জ্যাম লেগে গিয়েছিল বলে ডোরসেট, ডেভন ও কর্নওয়ালের পুলিশ জানিয়েছে। এর মধ্যে উপকূলমুখী মানুষের গাড়ির ভিড়ও উল্লেখযোগ্য ছিল। অনেকেই তিন মাস পর পানশালায় বসে পান করার আনন্দ উপভোগ করেছেন। শনিবার থেকে কার্যকর হওয়া অন্যান্য বিধির মধ্যে ছিল-দুটি পরিবারের লোকজন বাড়ির ভিতরে বা বাইরে মিলিত হতে পারবেন, রাতেও বাইরে অবস্থান করতে পারবেন- তবে তাদের সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে। ইংল্যান্ডের বাসিন্দাদের এখনো পরস্পরের থেকে দুই মিটার দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মুখ ঢেকে পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং মুখোমুখি না বসে তাহলে দুই মিটারের চেয়ে কম কিন্তু এক মিটারের চেয়ে বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে পারবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে রাতে ইংল্যান্ডজুড়ে বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনাগুলো নীল আলোতে আলোকিত করা হয়। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট নীল আলোতে উদ্ভাসিত ছিল। এর পাশাপাশি রয়েল আলবার্ট হল, ব্ল্যাকপুল টাওয়ার, শাড ও ওয়েমব্লি আর্চও নীল আলোতে আলোকিত ছিল। ইংল্যান্ডে শিথিল করা হলেও স্কটল্যান্ড ও ওয়েলসে সেবা খাতের ওপর বিধিনিষেধ বহাল আছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডে শুক্রবার থেকেই পানশালা খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ডে পানশালা আর রেস্তোরাঁয় একরত্তি জায়গা ফাঁকা নেই। মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে বাধাহীন। নয়নাভিরাম প্রকৃতি আর দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য উন্মুক্ত। রাজধানী রেইকাভি গমগম করছে। এমন নয় যে সুমেরুর কাছাকাছি এই দ্বীপ দেশের মানুষ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। বরং শুরুর দিকে, স্বল্প জনসংখ্যার এই দেশটিতে নতুন এই ভাইরাস বেশ ভালোভাবেই ছড়িয়েছিল। তবে তারা দ্রুত সে সংকট সামলে উঠতে পেরেছে বিস্তৃত পরিসরে ট্র্যাকিং ও ট্রেসিং ব্যবস্থাপনার কারণে। বলা যায়, দেশ থেকে করোনাভাইরাস দূর করতে এখন পর্যন্ত সফল হয়েছে আইসল্যান্ড। আর তার ফলেই ১৫ জুন থেকে পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, করোনাভাইরাস মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র হয়ে ওঠা লাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকোয় মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। মেক্সিকোতে মৃতের মোট সংখ্যা ৩০ হাজার ৩৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিন আরও ৬ হাজার ৯১৪ জন নতুন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ায় দেশটিতে সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ১৬৫ জনে। শনাক্ত রোগীর চেয়ে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা যে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হতে পারে, তা আগেই জানিয়েছিল মেক্সিকো সরকার। লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল ১৫ লাখ ৭৭ হাজারেরও বেশি রোগী নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর একমাত্র ব্রাজিলেই মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধ লাখ পার হয়েছে। ব্রাজিলে কভিড-১৯ এ মৃত্যু হয়েছে ৬৪ হাজার ২৬৫ জনের। লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ পেরুতেও মৃত্যু সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছুঁইছুঁই করছে। রাশিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার সকাল থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬৮ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রাশিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির অ্যান্টি-করোনাভাইরাস ক্রাইসিস সেন্টার জানিয়েছে।

সর্বশেষ খবর