শিরোনাম
সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
পান্থপথ ওয়ালটন শো-রুমে ডাকাতি

জেলে ওদের পরিচয় সেখানেই পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংখ্যায় ওরা সাত থেকে আটজন। জেলেই ওদের পরিচয়। এরপর থেকে ঘনিষ্ঠতা। কারণ তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময় চুরি-ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়ে জেলে গিয়েছিল। সেখানে বসেই তারা পরিকল্পনা করে বড় কোনো শোরুমে ডাকাতির। জেল থেকে বের হলেও তাদের যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। সর্বশেষ তাদের নিশানায় আসে রাজধানীর শেরেবাংলানগর এলাকার ৫৭/১৫, পান্থপথের ওয়ালটন প্লাজা। পরবর্তীতে গত ২৩ জুন মধ্যরাতে তাদের টার্গেট বাস্তবায়ন করে। তবে থেমে ছিল না পুলিশও। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় একে একে ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশীদ।

গতকাল দুপুরে শেরেবাংলানগর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসি হারুন বলেন, শোরুমের ম্যানেজার মো. রানা মিয়া ঘটনার পরদিন মামলায় উল্লেখ করেছেন, ২৪টি ওয়ালটন ফ্রিজ, পাঁচটি এলইডি টেলিভিশন, একটি মোবাইলফোন এবং ড্রাইভারের সাড়ে চার হাজার ও হেলপারের ৮০০ টাকা নিয়ে যায় ডাকাতরা। প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরার সহায়তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজ যাচাই-বাছাইসহ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ জুলাই রবিউল ইসলামকে (৩১) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুমন, রানা ও সাথী নামে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ১৮টি ওয়ালটন ফ্রিজ এবং তিনটি এলইডি টেলিভিশন। রবিউল ইসলাম এরই মধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে ডাকাতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে, ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সাত-আটজন। তাদের ডাকাতির পরিকল্পনা জেলে বসেই। ডাকাতির বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জে ডিলারের কাছে (রহমত ইলেকট্রনিকস) পাঠানোর উদ্দেশে ওয়ালটন কোম্পানির নিজস্ব পরিবহনে (ঢাকা-মেট্রো-ড-১১-৭০-৩৫) শোরুমের কর্মচারী জিহাদ হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মো. তারেক হোসেন মারফত মালামাল উঠানো হয় এবং পণ্যের চালান কপি ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন (৩০) এবং হেলপার মিরাজের (১৯) কাছে হস্তান্তর করে শোরুম কর্মচারীরা চলে যান। তারা স্থান ত্যাগ করার পরপরই একটি খালি পিকআপযোগে সাত-আটজন দুষ্কৃতকারী এসে তাদের হাতে থাকা চাপাতির ভয় দেখিয়ে ওয়ালটনের ড্রাইভার-হেলপারকে গাড়িতে উঠায় এবং বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নামিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। রবিউলের তথ্যের বরাত দিয়ে হারুন-অর-রশীদ বলেন, ডাকাতিতে চার সহযোগী মো. শাহজাহান (২৪), মেহেদী হাসান মৃধা ওরফে হাসান (২৮), মো. রনি (২৫) ও আবদুর রহিম (২৮) ময়মনসিংহ জেলা ডিবি পুলিশ কর্তৃক আটকের পর জেলহাজতে রয়েছে। আরেক আসামি সুমন রানাসহ অন্যরা পলাতক। তথ্য যাচাইয়ের পর তদন্ত টিম ময়মনসিংহ থেকে হাসান ও রনির কাছে থাকা দুটি ফ্রিজ ও দুটি টেলিভিশন উদ্ধার করে। সুমন ও রানাকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার ও একটি টেলিভিশন উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে আসামির স্বীকারোক্তি মতে সাতটি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়। পরে সাভার-আশুলিয়ায় মেহেদী হাসান মৃধার দুই আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দুটি ফ্রিজ জব্দ করা হয়। এ ছাড়া তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাথী নামে একজনকে গ্রেফতার ও তার দোকান থেকে ছয়টি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ খবর