ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষ বন্ধে দুই দেশের মধ্যে অবশেষে সন্ধি হয়েছে। সংঘর্ষের এক মাস পর লাদাখ সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রবিবার সম্মত হয়েছে উভয় দেশ। চীন গালওয়ান উপত্যকা থেকেও সেনা প্রত্যাহার করবে। গত রবিবার রাতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ওয়াইয়ের সঙ্গে টেলিফোন বৈঠক হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সূত্র জানান, উভয়ের মধ্যে ‘খোলামেলা মতবিনিময়’ হয়েছে। ভারত-চীন সীমান্ত বিষয়ে এরাই বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কথা বলেন। উভয় পক্ষই সহমত হয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের মধ্যে যে ঐকমত্য হয়েছিল তার ভিত্তিতেই উভয় পক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। সে ঐকমত্য হলো, উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির পূর্বশর্ত হলো সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা এবং উভয় পক্ষই মতভেদ বিবাদে রূপান্তরিত করবে না। সূত্রমতে উভয় পক্ষই একমত হয়েছে যে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হবে এবং ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা একেবারে মিটিয়ে দিয়ে আগেকার শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে আসবে। এও ঐকমত্য হয়েছে, উভয় দেশ সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তা অত্যন্ত দ্রুত সম্পন্ন করবে। সেনা প্রত্যাহারের পর্যায়ক্রমিক পদক্ষেপ উভয় দেশ সুনিশ্চিত করবে এবং সে তথ্য বিনিময় হবে। উভয় প্রতিনিধিই সহমত হয়েছেন যে, ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে মেনে চলবে। দুই রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি অঙ্গীকার করেছেন যে, একতরফাভাবে কোনো পক্ষ স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেবে না এবং উভয় পক্ষ প্রয়োজনে বার্তালাপ করবে যাতে সীমান্তের শান্তি বিঘ্নিত না হয়। সূত্র জানান, উভয় পক্ষ সহমত হয়েছে যে, বর্তমানে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে যে আলোচনার প্রক্রিয়া চলছে তা অব্যাহত রাখা হবে। একই সঙ্গে ভারত-চীন সীমান্ত বিষয়ে পরামর্শ ও সমন্বয়ের জন্য যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে তার অধীনেও আলোচনা চালু রাখা হবে। উভয় পক্ষ সম্মত হয় যে, এসব আলোচনার ফলাফল দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। সর্বোপরি দুই বিশেষ প্রতিনিধি সহমত হয়েছেন যে, সীমান্তে সম্পূর্ণ শান্তি বজায় রাখার জন্য দুজনে নিরন্তর আলোচনা চালিয়ে যাবেন যাতে স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়। এ আলোচনার পর আশা করা হচ্ছে, ভারত-চীন সীমান্ত বিবাদ আপাতত মিটল।