মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

কোকোপিটের সাহায্যে সবজির চারা উৎপাদন

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

কোকোপিটের সাহায্যে সবজির চারা উৎপাদন

বিশেষ পদ্ধতিতে কোকোপিটের সাহায্যে মিডিয়া দ্বারা তৈরি ভাইরাসমুক্ত সব মৌসুমের সবজি চারা উৎপাদন করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন শাহিন ফেরদৌস। এখন গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায়। জমি প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক। আর এ গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ সামনে রেখে বিশেষ পদ্ধতিতে মাটি ছাড়াই ৯০ শতক জমিতে সবজির চারা উৎপন্ন করছেন বিরামপুরের একইর গ্রামের শাহিন ফেরদৌস। তবে সব মৌসুমের আগেই শাহিন ফেরদৌস মাটি ছাড়াই সবজির চারা উৎপাদন ও বিক্রি করতে গড়ে তুলেছেন ‘শাফা এগ্রো’। খুচরা ও পাইকারি ভামিক কম্পোস্ট সার-কোকোপিট বিক্রিও করেন তিনি। কোকোপিট একটি উচ্চ বাফার ক্ষমতাসম্পন্ন জৈব পদার্থ যা মাটির গুণ বজায় রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। কোকোপিটের পিএইচ (ঢ়ঐ) সবসময় ৫.৫ থেকে ৭ থাকে যা সুস্থ উদ্ভিদ ও উন্নতমানের গাছপালা তৈরিতে সাহায্য করে এবং এর ফলে অনেক বেশি ফসল সংগ্রহ করা যায়। টবে মাটি ব্যবহার করলে ওজন বেশি হয়। কিন্তু কোকোপিট ব্যবহার করলে কম হয়। ছাদের ওপর অনেক টব ব্যবহার করলে লোড ক্যাপাসিটি কম হয়। কোকোপিট দিয়ে যে কোনো প্রকার চারা তৈরি বা গাছ লাগানো যায়। কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আধুনিক গ্রিনহাউসে কোকোপিটকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়। শাহিন ফেরদৌস জানান, শাফা এগ্রো ফার্মে বিশেষ পদ্ধতিতে কোকোপিটের সাহায্যে মিডিয়া দ্বারা তৈরি ভাইরাসমুক্ত সব মৌসুমের সবজি চারা তৈরি ও বিক্রি করা হয়। এ চারা তৈরিতে ট্রে ব্যবহার করা হয়। ক্রমবর্ধমান হাইড্রোপোনিক উপায়ে সবজি চাষের জন্য কোকোপিট ব্যবহার করা হয় যেন কোনোভাবেই গাছ বা চারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

 কোকোপিট উদ্ভিদের শিকড় উন্নয়নের জন্য একটি চমৎকার স্তর এবং গাছ বা চারা রোপণ করার সময় কোনো এজেন্ট প্রয়োজন হলে জৈব সারের সঙ্গে কোকোপিটের সংমিশ্রণে একটি গ্রোয়ার মিডিয়া তৈরি করে সরাসরি চারা তৈরি করা যায়। কোকোপিট মাটির তুলনায় অনেক হালকা এবং টবে ব্যবহারের সময় খুব সহজেই কোকোপিটের ভিতর বাতাস চলাচল করতে পারে, ফলে গাছ বেশি বেশি অক্সিজেন নিতে পারে। কোকোপিটের শোষক সময় অনেক। ফলে এটা গাছে ধীরে ধীরে শোষিত হয়। তিনি জানান, প্রথমে চারা তৈরির জন্য ৪০টি ট্রে, কোকোপিট (নারকেলের ছোবলার পচানো গুঁড়া), নেটসহ উপকরণ কেনায় খরচ পড়ে ২৫ হাজার টাকা। একবারেই এসব কিনতে হয়েছে। তবে চারা বিক্রির পর কোকোপিট কিনতে হয়। কোকোপিট ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একই ট্রে ও নেট কয়েক বছর চলে যায়, তাই বারবার কিনতে হয় না। এ পর্যন্ত ১০০ কৃষক তার থেকে চারা কিনেছেন। এখন বেগুন, মরিচ, পেঁপে, টমেটো, ফুলকপিসহ নানা সবজির চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। মৌসুমের আগেই চারা উৎপন্ন করে বিক্রি করা যায়। এতে ভালো দাম পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর