বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
কামরুল ইসলাম চৌধুরী, এমডি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক

প্রণোদনা বাস্তবায়নে কাজ করছি

আলী রিয়াজ

প্রণোদনা বাস্তবায়নে কাজ করছি

কামরুল ইসলাম চৌধুরী

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ব্যাংকের সামনে এখন প্রণোদনা বাস্তবায়নের কাজই গুরুত্বপূর্ণ। এই সংকটকালে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে প্রণোদনা বাস্তবায়নের কাজ করছি। মার্কেন্টাইল ব্যাংক সব সময়ই জনগণের ব্যাংক। এ জন্য প্রতিটি গ্রাহকের কথা চিন্তা করে আমরা ব্যাংকিং পরিকল্পনা নিয়ে কর্মকান্ড পরিচালনা করছি। আমাদের গ্রাহকদের রক্ষায় বিশেষ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডি ও সিইও হিসেবে যোগদানের পর প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ে নানা প্রডাক্ট নিয়ে এসেছেন তিনি। সারা দেশের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসতে এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। বর্তমানে মার্কেন্টাইল ব্যাংক দেশের অন্যতম প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। এমনকি ডিপোজিটরদের নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বেসরকারি খাতের এই ব্যাংকটি। কামরুল ইসলাম চৌধুরী ব্যাংকের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে বলেন, বর্তমানে আমাদের সামনে প্রধান কাজ প্রণোদনা বাস্তবায়ন করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে আমরা বাস্তবায়ন করছি। আমাদের প্রতিটি শাখার কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সমস্যা নিয়ে কাজ করছেন। কোথায় কীভাবে প্রণোদনার ঋণ দিতে হবে সেটা নির্ধারণ করে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করছি। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে আমরা সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে এসএমই খাত, কৃষি খাতে আমরা বিনিয়োগ করছি। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডি বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংক শুরু থেকেই জনগণের ব্যাংক হিসেবে কাজ করছে। এ জন্য আমাদের ডিপোজিটরদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও বেশি মুনাফা দিয়েছি। এই করোনাকালে আমরা যে সংকটে পড়েছি তাতেও কোনো গ্রাহকের ডিপোজিট সুদ হার কমানো হয়নি। সরকার ৬/৯ সুদহার বেঁধে দিয়েছে। এ জন্য এখন ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ আমরা কার্যকর করেছি। কিন্তু আমাদের আগের ডিপোজিট সুদ হার এখনো কমানো হয়নি। এ জন্য আমাদের প্রথম দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে মুনাফা কমেছে। এটা বেশিরভাগ ব্যাংকের কমেছে। ডিপোজিট সুদ হার আগামী ২/৩ মাসের আগে কমবে না। কারণ এটি নিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। নতুন সমন্বয় হার নির্ধারণ করতে হবে। আমরা যেভাবে এখন কাজ করছি তাতে আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সিইও বলেন, সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে আমরা সব সময় বদ্ধপরিকর। করোনার এই সময় আমরা গ্রাহকের পাশে আছি। সারা দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং উইন্ডো চালু করেছি। ১০টি ইসলামী ব্যাংকিং শাখা করেছি। আমাদের সব শাখা খোলা রেখেছি গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে। প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ের জন্য আমরা নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছি। গ্রাহকরা এখন ঘরে বসেই লেনদেন করতে পারেন। কামরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে বড় সমস্যা শ্রেণিকৃত বা খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণ আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। ব্যাংকগুলোর সংকট কাটাতে হলে খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। ব্যাংকগুলোর যেমন দায়িত্ব আছে তেমনি উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে। খেলাপি যত বেশি রিকভারি করা যাবে ব্যাংকিং পরিস্থিতি ততবেশি ভালো হবে। তিনি বলেন, সংকটের মধ্যেও মার্কেন্টাইল ব্যাংকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৮ সালে আমরা ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিলেও ২০১৯ সালে ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছি। এর মধ্যে ১১ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছি। করোনার মধ্যেও ব্যাংকগুলোর মধ্যে আমরা প্রথম এজিএম করেছি। করোনার মধ্যে যখন অনেকেই বিজনেস গুটিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছেন, সেখানে আমরা নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে গ্রাহকদের  সেবা দিচ্ছি। মহামারীর মধ্যেও আমরা এজেন্ট ব্যাংকিং ও ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডোর মাধ্যমে সেবার দ্বার উন্মোচন করেছি।

সর্বশেষ খবর