বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সংকট দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতিতে বিপর্যয়

-মাহবুবুল আলম

ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম

সংকট দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতিতে বিপর্যয়

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, অর্থনীতিকে সচল করতে হলে ঘরে বসে তা হবে না। করোনা পরিস্থিতি মানিয়ে নিয়েই মানুষকে জীবিকার জন্য বের হতে হবে। মিল-কারখানা চালু রাখতে হবে। জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হয়তো ছয় থেকে সাত মাস সময় লেগে যেতে পারে। তবে এর চেয়ে বিলম্ব হলে এই সংকটে আমাদের অর্থনীতিতে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

শতবর্ষী চট্টগ্রাম চেম্বারের শীর্ষ নেতা মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের রপ্তানির চেয়ে আমদানি অনেক বেশি। শিল্পের কাঁচামাল প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। তাই এই করোনার কারণে আমাদের স্থানীয় উৎপাদনে যেমন আঘাত এসেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক উৎপাদনেও আঘাত এসেছে। তিনি বলেন, আমাদের বৈদেশিক আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে- রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। তারাও আজ চরম বেকায়দায় রয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে অনেক শ্রমিক খালি হাতে ফিরতে শুরু করেছেন। বৃহত্তর চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমনিষ্ঠ কাজে জড়িত সেই শত শত বছর আগে থেকেই। তারাও আজ বেকার হয়ে দেশে ফিরতে শুরু করেছে। এসব কর্মক্ষম মানুষকে দেশে কীভাবে কাজে লাগানো যায় এবং কীভাবে পুনরায় নিজ নিজ কর্মস্থলে পাঠানো যায়- এসব বিষয় নিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে চেম্বারের পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশ সেন্টার ফর স্কিল্ডআপ’ নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে। মাহবুবুল আলম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কোনোভাবেই বাড়ার কথা নয়, যেটা হচ্ছে সেটা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে সেই সিন্ডিকেটধারীরাই করছে। কারণ, মানুষের এখন ক্রয় ক্ষমতা যেমন কমে এসেছে, তেমনি ভোগের পরিমাণও কমে এসেছে। তাই পণ্যের দাম বাড়ার চেয়ে কমার কথা। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম চেম্বার মার্চের শেষের দিকে শুরু করে পুরো রমজানেই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চাল, ডাল, চিনি, আলু লবণ প্রতিদিন নগরীর ১৫টি স্পটে ১৫ ট্রাক মালামাল অত্যন্ত কম দামে বিক্রি করেছে। সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনের সুযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রকৃত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা হয়রানির শিকার হন অথবা বঞ্ছিত হয়ে থাকেন। তাই চট্টগ্রাম বিভাগের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা যাতে সরকারি এই ঋণের সুযোগ নিতে পারেন সে জন্য চেম্বারে একটি হেল্পডেক্স খোলা হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমেও উদ্যোক্তারা যোগাযোগ করতে পারেন এই ডেক্সে। অত্যন্ত আশাবাদী ব্যবসায়ী নেতা মাহবুবুল আলম দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং মেধাবী। প্রাকৃতিক বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়- তা এদেশের মানুষের কাছে অনেকটা মজ্জাগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা দুর্যোগেও মানুষ প্রয়োজনমতো স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে জীবীকার জন্য ঘর থেকে বের হবে। আমাদের দেশের অধিকাংশ পরিবারে একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি আয় করেন আর পাঁচজনে খান। তাই প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে যে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অবশ্যই সফল হবে।

সর্বশেষ খবর