বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

পেশা বদলাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

-আবু তাহের মো. শোয়েব

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

পেশা বদলাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

করোনা পাল্টে দিয়েছে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মানুষের জীবনযাত্রা। করোনার কারণে প্রবাসেও অনেকে হারিয়েছেন কর্মসংস্থান। কমে এসেছে প্রবাসী আয়। যে কারণে কমে গেছে দেশে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ। তাই প্রবাসী পরিবারগুলোতেও দেখা দিয়েছে আর্থিক সংকট। লকডাউন শিথিল হওয়ায় মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেও কাস্টমার মিলছে না। দোকান খুলে সারাদিন বসে থেকেও মিলছে না ক্রেতা। এতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাস দুয়েকের মধ্যেই হয়তো দেখা যাবে সিলেটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ করোনার কারণে ইতিমধ্যে পেশা বদল করেছে। আগামীতে হয়তো ব্যবসায়ীদেরও পেশা বদল করে জীবন-জীবিকার জন্য অন্য কোনো পথ বেছে নিতে হবে। করোনাকালে মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে আলাপকালে এমন সংকটের কথা জানালেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব। চেম্বার সভাপতি বলেন, লকডাউন শিথিল হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা অনেক আশা নিয়ে দোকানপাট খুলেছিলেন। কিন্তু তারা হতাশ হয়েছেন। সংকট আরও বেড়েছে। লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাবস্থায় যে লোকসান গুনতে হয়েছিল এখন তার চেয়ে বেশি গুনতে হচ্ছে। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎবিল, সার্ভিস চার্জ সবকিছু মিলিয়ে এখন ব্যবসায়ীরা দিশাহারা। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ারও কোনো লক্ষণ নেই। স্বাভাবিক হলেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সহসাই ব্যবসাবান্ধব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অনেক ব্যবসায়ী এখন পেশা বদলের চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছেন। সিলেটে পর্যটন শিল্পকে ঘিরে গড়ে উঠেছে হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা। করোনার কারণে ঘোষণা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে সব হোটেল। রেস্টুরেন্টগুলোর তালাও খুলছে না। এমতাবস্থায় এই খাতের ব্যবসায়ের ভবিষ্যৎ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, সিলেটে পর্যটন ব্যবসায় মোটামুটি দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে এই খাতে। করোনা সবকিছু ল-ভ- করে দিয়েছে। খুব সহজে এই খাত দাঁড়ানো সম্ভব নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আর্থিক সংকটের কারণে মানুষ ঘুরতে বের হবে না। যে কারণে এই খাতে যে অন্ধকার নেমেছে তা সহসা কাটার নয়। চেম্বার সভাপতি মনে করেন দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে হবে। এ জন্য সরকারি প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণের কোনো বিকল্প নেই। সরকার যদি এগিয়ে না আসে তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা টিকে থাকতে পারবে না। বিশেষ করে সিলেটে শিল্প কারখানা না থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে মারাত্মক অর্থনৈতিক স্থবিরতা নেমে আসবে। হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। পেশাবদলে বাধ্য হবে অনেক মানুষ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর