বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বর্ষায় সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে ফুল ল্যান্টানা

মোস্তফা কাজল

বর্ষায় সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে ফুল ল্যান্টানা

বর্ষার প্রকৃতিতে মোহনীয় সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে ফুল ল্যান্টানা। এ ফুল নানা রঙের ও বর্ণের হয়ে থাকে। সব ঋতুতে দেখা গেলেও বর্ষায় এ ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে আকর্ষণ করে। উদ্ভিদের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন অংশ ফুল। ফুল গাছ অনেক জায়গাতেই জন্ম হয়। রাজধানীর বোটানিক্যাল গার্ডেনের দেশীয় ফুল এলাকায় ল্যান্টানা- ফুলে এখন একাকার। এর বৈচিত্র্যতার শেষ নেই। এই ল্যান্টানা ফুল প্রায় সারা বছর ফোটে। পাশাপাশি প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে। রাজধানীর বঙ্গভবন, গণভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, রাজউক ভবনের সবুজ লনে এই ফুল সমেত গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি অভিজাত এলাকার বাড়ির বাগানে এ ফুলসহ গাছ দেখা যায়। এ ছাড়া ভরা বর্ষায় বিভিন্ন নার্সারিতে এ ফুলের চারা কিনতে পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রায় প্রতিটি মানুষ ফুলকে ভালোবাসে। এ জন্য ফুলকে বলা হয়  সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল হলো সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব দান। যা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। বলা যায় ফুল একটি সর্বজনীন উপহার। প্রায় আড়াই লাখ প্রজাতির ফুল গোটা পৃথিবীতে রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে দেড় লাখ প্রজাতির ফুল। কৃষি ও বন বিভাগ ফুল গাছ সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ১৯৬৫ সাল থেকে ল্যান্টানা ফুলের চাষ হচ্ছে।

বর্তমানে করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় বদলে  গেছে সাধারণ মানুষের জীবনধারা। ফলে সমাজ জীবনে ক্রান্তিকাল বেড়েছে। আরও বেড়েছে সাধারণ মানুষের ঘরে থাকার প্রবণতাও। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে চলছে করোনা নামক অদৃশ্য এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে নীরব যুদ্ধ। সেই সুযোগে প্রকৃতি যেন আপন ছন্দে ফিরেছে। সবুজ ও সতেজতার পূর্ণতা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে সৌন্দর্যের নতুন রূপে। প্রকৃতির  সেই নতুন রূপের কিছুটা রেশ পড়েছে ফুল ল্যান্টানার মাঝেও। গতকাল  সরেজমিন রাজধানীর বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় ল্যান্টানা ফুলের এই  সৌন্দর্যের মোহনীয় রূপ দেখা গেছে। উদ্যানের সুপারভাইজার সেলিম মিয়া জানান, করোনার প্রভাবে উদ্যানে সর্বসাধারণের চলাচল না থাকায় ফুলের গাছগুলোতে কারও থাবা পড়েনি। তাই ল্যান্টানা ফুলগুলো যেন এবার একটু বেশি সৌন্দর্য নিয়ে ফুটে উঠেছে। ১৯৭৭ সাল থেকে বন বিভাগের উদ্যোগে বন বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন উদ্যানে এ ফুলের চাষ শুরু হয়। এ ফুল গাছ কষ্টসহিষ্ণু হওয়ায় দেশের বনাঞ্চল, পাহাড়ি টিলা এলাকায় বেশি দেখা যায়। ল্যান্টানা ফুলের রূপের জুড়ি নেই। ফুলে রয়েছে কমলা, হলুদ, বেগুনি এবং সাদা রঙের মিশ্রণ। ফুলটির বৈশিষ্ট্য হলো সময়ের সঙ্গে রং বদলানো। তাই নতুন ফুল ও পুরনো ফুলের মধ্যে রঙের ভিন্নতা দেখা যায়। এই গাছ প্রজাপতিবান্ধব। গাছটির ভেষজ গুণ আছে। এ ফুল গাছের পাকা বা শুকনো ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে ল্যান্টানার চারা উৎপাদন করা যায়। ফুল বিশেষজ্ঞ তমা সুলতানা বলেন, ল্যান্টানা ফুল কমবেশি সব সময়  চোখে পড়ে। বন বিভাগের এ উদ্যানে এ ফুলের রাজত্ব দেখে মনে হচ্ছে যেন দীর্ঘদিনের শৃঙ্খল  থেকে মুক্তি পেয়েছে। উদ্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরেস্টার আবদুল মজিদ ভূইয়া বলেন, নীরব, নির্জন ও কোলাহলমুক্ত মায়াময় পরিবেশে এ উদ্ভিদ উদ্যানের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এ ফুল। এ ফুল গাছটি আড়াই থেকে তিন ফুট লম্বা হয়। গাছে থোকা থোকা ফুল ফোটে। এবার জাতীয় উদ্যানের শেডে ল্যান্টানার ফুলে ছেয়ে আছে। সেই অপরূপ দৃশ্য চোখে না দেখলে  সৌন্দর্যের বর্ণনা করা কঠিন হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর