শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকারে আবদুল হালিম চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পূবালী ব্যাংক

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রকল্পের কাজগুলো শুরু হওয়া উচিত

আলী রিয়াজ

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রকল্পের কাজগুলো শুরু হওয়া উচিত

আবদুল হালিম চৌধুরী

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হালিম চৌধুরী বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। সরকার গার্মেন্ট খাতে শ্রমিকদের কল্যাণে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটি ছিল সঠিক পদক্ষেপ। এখন সারা বিশ্বের লকডাউন তুলে দিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু হয়েছে। বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। প্রণোদনা প্যাকেজে শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন টেন্ডার চালু হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্পের অনেক কাজ বন্ধ আছে। এগুলো চালু করা উচিত। এতে অর্থনীতিতে আরও আর্থিক কর্মকান্ড বেড়ে যাবে। মানুষের হাতে অর্থ আসবে।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে গতকাল আবদুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘‘করোনার কারণে আমাদের রপ্তানি-বাণিজ্য প্রায় স্থবির হয়ে গিয়েছিল। ক্রেতা দেশগুলোর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করায় অর্ডার আসছে। ফলে এর সুফল আমরা দ্রুত পাব। মূলত এখন আমরা ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ পলিসি নিয়ে কাজ করছি। এখনই কোনো পরিস্থিতি সম্পর্কে বলার সময় আসেনি। যেহেতু পুরো উৎপাদন কার্যক্রম আমরা শুরু করতে পারিনি, তাই ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘দেশের শিল্প খাতের বড় অংশ রড-সিমেন্ট শিল্প। সরকারি টেন্ডার বন্ধ থাকায় নতুন প্রকল্পে কাজ শুরু হচ্ছে না। এ ছাড়া চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও পুরোপুরি শুরু হয়নি। এগুলো দ্রুত শুরু করা উচিত। তাহলে এসব খাতের উৎপাদন শুরু হবে। এসব শিল্পের উৎপাদন বন্ধ থাকলে তা আমাদের পুরো শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নির্মাণশিল্পের কাজের সঙ্গে দেশের অর্থনীতির একটি বৃহৎ অংশ জড়িত। শ্রমিক থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে এর সংযোগ রয়েছে।’ বিশিষ্ট এই ব্যাংকার বলেন, ‘সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ একটি সঠিক পদক্ষেপ। এতে শিল্প খাত অনেক সহায়তা পাবে। তারা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে সহায়তা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমরা কয়েক দফা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছি। প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ নিয়ে মনিটরিং খুব জরুরি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনিটরিং করছে। আমরাও করছি। তবে এই প্যাকেজে বৃহৎ শিল্প সহায়তা পেলেও ছোট শিল্পগুলো কিছুটা কম সুবিধা পাচ্ছে। সক্ষমতা বিবেচনায় ব্যাংকগুলো ভূমিকা রাখছে। ২০ হাজার কোটি টাকার এসএমই তহবিল থেকে সুবিধা ব্যবসায়ীদের দেওয়া হচ্ছে। এগুলো খুব বেশি মনিটরিং করা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন সরাসরি দেওয়ার পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। সব শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হয়েছে। ব্যাংকের ডিজিটালাইজেশনের একটি বড় ইতিবাচক পরিবর্তন এটি। শ্রমিকরা সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে বেতন পাওয়ায় বড় একটি অংশ ব্যাংকমুখী যেমন হয়েছে, তেমনি শিল্প শ্রমিকদের জন্য এটি একটি বড় পরিবর্তন। এই পরিবর্তন আমাদের আর্থিক কর্মকান্ডে আরও শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছে। এটা আমরা শিল্পের অন্যান্য খাতেও ব্যবহার করতে পারি।’ পূবালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে আশার দিক হচ্ছে, শ্রমিকদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার খুব কম। এটা মিরাকল হলেও আমাদের জন্য আশীর্বাদ। শ্রমিকরা কাজ করতে চাইছেন। তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। আমি মনে করি শ্রমিকদের এই সক্ষমতা আমাদের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। ব্যাংকিং খাত সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। অর্থনীতি সচল রাখতে ব্যাংকগুলো সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। আমরা সংকট কাটিয়ে অবশ্যই সফল হব।’

সর্বশেষ খবর