প্রতিবেশী এক নারী ব্লেড দিয়ে গলা কেটে চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়াকে খুন করেন। রাজধানীর আদাবরে এ খুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশী পারভীন আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও পারিবারিক ঘটনা বিশ্লেষণের পর এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
গতকাল দুপুরে শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ। গ্রেফতারের পর পারভীন পুলিশকে জানিয়েছেন, তার দুই সন্তান সাদিয়াদের ঘরে গেলে গালিগালাজ ও মারধর করতেন তার মা। এর প্রতিশোধ নিতেই এবং উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্যেই সাদিয়াকে খুন করেন। ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, গত ৩ জুলাই দুপুরে উত্তর আদাবর ৩৮/১০ একটি বাসা থেকে গলাকাটা অবস্থায় চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে উঠে আসে প্রতিবেশী পারভীন আক্তারের সঙ্গে নিহত শিশু সাদিয়ার বাবা শাহজাহান ও মা মুর্শিদা বেগমের পারিবারিক দ্বন্দ্বের বিষয়। ওই ঘটনায় আদাবর থানায় একটি মামলা হয়। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে। পুলিশ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, প্রযুক্তি সহায়তা ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে গত ৫ জুলাই পারভীনকে (২৪) গ্রেফতার করে। পরে আদালতের নির্দেশে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সাদিয়াকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর পরিবার ও হত্যাকারী পারভীনের পরিবার নিম্নবিত্ত। আসামি পারভীন গৃহিণী। তিনি ৫ মাস আগে ঢাকায় আসেন। তার স্বামী রিকশাচালক। সাদিয়ার বাবা দিনমজুর এবং দাদা বস্তির ম্যানেজার। পারভীনের স্বামীকে বাসার সামনে সাদিয়ার দাদা দোকান করতে না দেওয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এ ছাড়া পারভীনের দুই বছর ও চার বছর বয়সী দুটি সন্তান সাদিয়াদের বাসায় গেলে তার (সাদিয়ার) বাবা-মা তাদের মারধর করতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ও শত্রুতার সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন সাদিয়ার মা তাকে ঘুম পাড়িয়ে রান্না করতে গেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরে ঢুকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটান পারভীন। তিনি একাই এই নির্মম হত্যাকান্ড ঘটান।
