বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

বাঁশের মাচায় আঙুর চাষ

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

বাঁশের মাচায় আঙুর চাষ

বাঁশের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙ্গুর ফল। এ দৃশ্য চোখে পড়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা হঠাৎপাড়ার মাঠে। একই দৃশ্য চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়া, মহিলা কলেজপাড়া ও দামুড়হুদার কলাবাড়ী গ্রামেও। অনেকটা শখের বসেই আঙ্গুর চাষ শুরু করেন চুয়াডাঙ্গার অনেক যুবক। কেউ বাড়ির আঙিনায় আবার কেউ কৃষি জমিতেই গড়ে তুলেছেন আঙ্গুরের মাচা। ইতিমধ্যে অনেকের গাছে ফলও এসেছে।  তাদের প্রত্যাশা অচিরেই বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠবে আঙ্গুরের চাষ। এখন তাদের চোখেমুখে সফলতার স্বপ্ন।

স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা হঠাৎপাড়ার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম বছর দুয়েক আগে ভারত থেকে ২৫টি আঙ্গুরের চারা নিয়ে আসেন। সেই চারা রোপণ করেন নিজ জমিতে। গত বছর তাদের গাছে প্রথম ফল আসে। এ বছর অনেকটা পরিপূর্ণ ফল দেখে তারা সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। আরেক যুবক চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়ার আহসান হাবিব মানিক। তিনিও অনেকটা শখের বসেই নিজ বাড়িতে রোপণ করেন আঙ্গুরের চারা। গত বছর থেকে তার গাছেও আসছে ফল। এদের মতো চুয়াডাঙ্গার আরও অনেকেই শখের বসে গড়েছেন আঙ্গুর বাগান। আঙ্গুর চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, এক বিঘা জমিতে আঙ্গুরের চাষ করতে প্রথম পর্যায়ে খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। যা থেকে বছরে অন্তত তিন লাখ টাকার আঙ্গুর পাওয়া যাবে। আঙ্গুর চাষি আমিরুল ইসলাম জানান, দেশের মাটিতে বিদেশি ফলের চাষ করার নেশা থেকেই তিনি আঙ্গুর চাষের উদ্যোগ নেন। এ বছর আঙ্গুর গাছে থোকায় থোকায় আঙ্গুর দেখে তিনি বেশ আনন্দিত। চলতি বছর তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকার আঙ্গুর বিক্রি করেছেন। পরের বছরগুলো থেকে এ আয় বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। আরেক আঙ্গুর চাষি আহসান হাবীব মানিক জানান, শখ করে খুলনা থেকে দুটি চারা এনেছিলেন তিনি। সেই গাছে এখন আঙ্গুর ধরেছে। তার গাছের আঙ্গুর দেখে এলাকাবাসীর বিশ্বাস জন্মেছে দেশের মাটিতেও আঙ্গুর চাষ সম্ভব। আঙ্গুর দেখতে আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, ইতিপূর্বে আমাদের দেশে অনেকেই আঙ্গুর চাষ করেছেন। কিন্তু সেসব আঙ্গুর সুস্বাদু না হওয়ায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তবে দর্শনা এবং চুয়াডাঙ্গার যুবকরা যে আঙ্গুরের চাষ করেছেন তা খেতেও বেশ সুস্বাদু। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান বলেন, চুয়াডাঙ্গাতে মূলত শখের বসেই আঙ্গুরের চাষ হচ্ছে। যা অনেকটাই পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের আবহাওয়া এবং মাটি আঙ্গুর চাষের জন্য কতটা উপযোগী তা জানতে আমাদের আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে চুয়াডাঙ্গার চাষিদের ব্যতিক্রমী চাষে বরাবরই উৎসাহ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ।

এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর