শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউই

সামাজিক দূরত্ব কেউ মানছে না। আইডিয়াল স্কুলের সামনের রাস্তা দখল করে বাজার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সংক্রমণ রাজধানীর গ-ি ছাড়িয়ে পৌঁছেছে গ্রামগঞ্জে। কিন্তু সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউ। জীবিকার প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বাড়ছে আক্রান্তের হার।

গতকাল যাত্রাবাড়ী পাইকারি মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রেতারা পাশাপাশি দোকান সাজিয়ে বসেছেন। ধাক্কাধাক্কি করে মাছের ডালা সাজাচ্ছেন। ক্রেতারাও ভিড় ঠেলে মাছ কিনছেন। মাস্ক থুঁতনিতে লাগিয়ে ঘুরছেন। করোনাভাইরাস নামে যে কোনো সংক্রামক রোগ জীবন কেড়ে নিচ্ছে এ বাজার দেখলে তা বোঝার উপায় নেই। ভিড় ঠেলে হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে আসছিলেন আসলাম হোসেন। মাস্ক হাতে ব্যাগের সঙ্গে ঝোলানো। জনসমাগমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘দৈনন্দিন খাবারের জন্য বাজার তো করতেই হবে। ভিড় হলে কিছু করার নেই। মাস্ক পরেই ছিলাম, কিছুক্ষণ আগে খুলেছি।’ কাজে বের হলেও মানুষ শারীরিক দূরত্ব মানছে না। কমলাপুর রেলস্টেশনে তেমন ভিড় না থাকলেও ট্রেন এলেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মাইকে বলে ধমক দিয়েও মানুষকে ট্রেন এলে থামানো যায় না। আগে ট্রেনে ওঠার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আমরা অনবরত ঘোষণা করছি একজন যাত্রী প্ল্যাটফরমে থাকলেও ট্রেন ছাড়বে না। কিন্তু শোনার মতো মানসিকতা নেই। সামাজিক দূরত্ব তো বাদ, ধাক্কাধাক্কি সামাল দিতে ব্যস্ত থাকতে হয় আমাদের।’ মিরপুর-১ নম্বরে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে ফল কিনতে এসেছেন সোহেল হাবিব নামে এক ব্যক্তি। আরেক ক্রেতার খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে দেখা যায় তাকে। দূরে লাল দাগ থাকলেও তিনি কাছে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বলেন, ‘তিন মাস ধরে তো মানলাম। আর কত? প্রয়োজনে তো বের হতেই হবে। করোনা হলে ওষুধ খাব। আমার বয়স অল্প, করোনায় কিছু হবে না।’ অনেক তরুণও মারা যাচ্ছে। জানেন কিনা- জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘তাদের হয়তো অন্য অসুখ হচ্ছে। আমি লেবু পানি খাচ্ছি। আগের অভ্যাসমতো চলাফেরা করছি। সব সময় করোনাভাইরাসের কথা মাথায় রেখে তো আর রাস্তায় চলা যায় না।’ রূপনগর আবাসিক এলাকার এক গার্মেন্ট কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব না মেনে পোশাকশ্রমিকরা গার্মেন্টে কাজ করছেন। আমরা তো আর শারীরিক দূরত্ব নিয়ে মালিকপক্ষকে কিছু বলতে পারি না। বলতে গেলে চাকরি হারাতে হয়।’

সর্বশেষ খবর