শনিবার, ১১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

নেপালে দূরদর্শন ছাড়া ভারতীয় সব চ্যানেল বন্ধ

প্রতিদিন ডেস্ক

নেপালে একটি ছাড়া ভারতের সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ভারতের বিভিন্ন সংবাদভিত্তিক চ্যানেলের বিরুদ্ধে নেপালের রাজনীতিকদের চরিত্র হনন ও নেপাল সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ করেন।

এর পরপরই নেপালের কেবল অপারেটররা দূরদর্শন ছাড়া বাকি সব ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় বলে দ্য হিন্দু জানিয়েছে। কেপি শর্মা ওলি মন্ত্রিসভার সদস্য যুবরাজ খাতিওয়াডা বলেছেন, নেপালে যেসব বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার চালায়, তাদের প্রধানমন্ত্রী ও অন্য রাজনীতিকদের চরিত্র হনন করতে দেওয়া হবে না। সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে কী কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কাঠমান্ডু তা খতিয়ে দেখছে বলেও বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়েছিলেন। ‘গণমাধ্যমের কোনো বিষয়ে আমরা হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কিন্তু কেবল বিদেশি গণমাধ্যমই নয়, নেপালের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলে, নেপালের নাগরিক কিংবা রাজনীতিকদের চরিত্র হনন করতে দেখা গেলে কিংবা আপত্তিকর অনুষ্ঠান প্রচার করলে এমনকি দেশি টেলিভিশন চ্যানেলের ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে,’ নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি ও চীনের রাষ্ট্রদূত হু ইয়ানচিকে নিয়ে বেশ কয়েকটি ভারতীয় চ্যানেলে প্রচারিত আপত্তিকর অনুষ্ঠান নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে খাতিওয়াডা এমনটাই বলেছিলেন। তার এ মন্তব্যের কিছু সময় পরই নেপালে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো একে একে ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভারতে নেপালের রাষ্ট্রদূত নীলাম্বর আচার্যও নয়া দিল্লির কাছে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে নেপালি নেতাদের নিয়ে আপত্তিকর সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।  নেপালের মানচিত্র নিয়ে সম্প্রতি কাঠমান্ডু ও দিল্লির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। নেপালের পার্লামেন্টে অনুমোদিত নতুন মানচিত্রে এমন কিছু জায়গা স্থান পেয়েছে যেগুলোকে ভারতও নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নেপালের রাজনীতিতে চীনের প্রভাব নিয়ে নয়া দিল্লির দুশ্চিন্তার বিষয়টি গোপন নয়। ওলি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচন্ডের মধ্যে বিরোধ মেটাতে নেপালে চীনের রাষ্ট্রদূত হুর সাম্প্রতিক দৌড়ঝাঁপের বিষয়টিও তাদের উদ্বিগ্ন করেছে। এর মধ্যে নেপালে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধের বিষয়টি দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা আরও উসকে দিতে পারে বলেও অনেকের অনুমান। খাতিওয়াডার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেপালি প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির শীর্ষ উপদেষ্টা বিষ্ণু রিমাল বলেন, ‘ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে নিয়ে যে ধরনের খবর ও মন্তব্য দেখা যাচ্ছে তা খুবই আপত্তিকর এবং নিন্দা করার মতো।’ ভারতীয় টিভি চ্যানেলের এ ধরনের কর্মকান্ড নেপাল ও ভারত এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে থাকা অনেক পুরনো বন্ধুত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি। ওলির আরেক উপদেষ্টা রঞ্জন ভাটারি ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোকে নেপালের সরকার, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে নেপালি জনগণের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান এবং তাদের স্বাধীনতাকে সম্মান দেখাতে অনুরোধ করেছেন। দ্য হিন্দু

সর্বশেষ খবর