রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন সাতজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের বিভিন্ন জেলায় জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা ও বরগুনার আমতলীতে একজন করে রয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন হাসপাতলে এবং একজন আবাসিক হোটেলের কক্ষে মারা যান। সংশ্লিষ্টদের বাড়িঘরও লকডাউন করেছে প্রশাসন। করোনা সন্দেহে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করাও হচ্ছে। অনেককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য- কুমিল্লা : কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও চারজন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড ও করোনা ইউনিটের আইসিইউতে তাদের মৃত্যু হয়। তারা সবাই পুরুষ। গতকাল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন জানান, কুমেক হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ ছিল। বাকি চারজনের করোনা উপসর্গ ছিল। উল্লেখ্য, এ হাসপাতালের এ পর্যন্ত করোনা উপসর্গে ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ : জেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাবেক ফুটবলার মাহফুজুর রহমান (৬০) মারা গেছেন। কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান। ওই হাসপাতাল ও মৃত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাবেক ওই ফুটবলার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগের দিন মঙ্গলবার ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরের দিন বৃহস্পতিবার দুবার তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে দুটির ফলই নেগেটিভ এসেছে। মৃত্যুর পর তাই আবারও নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাবেক ওই ফুটবলারের অবস্থার অবনতি ঘটলে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে তিনি মারা যান। মারা যাওয়া মাহফুজুর রহমান কিশোরগঞ্জ শহরের খড়মপট্টির বাসিন্দা। ফুটবল খেলার পাশাপাশি সংস্কৃতিকর্মী হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার বিকালে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, জ্বর, সর্দি, কাশিসহ নানা উপসর্গ নিয়ে গতকাল বেলা ২টার দিকে আলীপুর ইউনিয়নের ওই ব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বিকাল পৌনে ৫চটার দিকে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফনের জন্য বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। টানানো হয়েছে লাল পতাকা। জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আমতলী (বরগুনা) : জেলার তালতলী উপজেলা শহরের সদর রোডের ভাই ভাই আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে শনিবার সকালে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ইদ্রিসুর রহমান (৫৫) নামের এক পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, পাথরঘাটা উপজেলার লাঠিমারা গ্রামের ইদ্রিসুর রহমান তালতলী বাজারের মাছ বাজার সংলগ্ন এলাকায় চেম্বার খুলে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। গত ৩ বছর ধরে তিনি ভাই ভাই আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে বসবাস করতেন। ৪-৫ দিন ধরে ইদ্রিসুর রহমান জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে তার কক্ষ বন্ধ দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন ও হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে তার কক্ষে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।

সর্বশেষ খবর