বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্বজুড়ে তিন হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু

ব্রিটেনে দ্বিতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে তিন হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রীর অভাবই এসব মৃত্যুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসে ৫৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ায়। যুক্তরাজ্যে মারা গেছেন ৫৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মী, এর মধ্যে ২৬২ জন স্বেচ্ছাসেবীও রয়েছেন। আর করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ৫০৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর। যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে মারা গেছেন ৩৫১ স্বাস্থ্যকর্মী। আর মেক্সিকো এবং লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৪৮ জন স্বাস্থ্যকর্মীর। প্রায় ৬৩টি দেশেই স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর (পিপিই) ঘাটতি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে। ব্রিটেনে দ্বিতীয় ধাপে লক্ষাধিক মৃত্যুর শঙ্কা : বিজ্ঞানীরা বলছেন- ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে শীতে আরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। শীতকালে দেশটিতে এক লাখ ২০ হাজারের মতো মানুষ মারা যেতে পারেন। বিজ্ঞানীরা একটি মডেল তৈরি করেছেন যেখানে দেখা গেছে, জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে অবস্থা খারাপ হলে ২৪ হাজার ৫০০ থেকে ২ লাখ ৫১ হাজার মানুষ মারা যেতে পারে শুধু হাসপাতালেই। যে ঝুঁকি মডেল তৈরি করা হয়েছে, তার মধ্যে লকডাউন, চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন বিবেচনায় আনা হয়নি। এ পর্যন্ত দেশটিতে ৪৪ হাজার ৮৩০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। এর মধ্যে জুলাইতে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমেছে। এই মাসের ১৪ দিনে মৃত্যু হয়েছে মাত্র এক হাজার ১০ জনের। যেখানে এপ্রিলের শেষের দিকে এবং মে মাসে প্রতিদিনই দেশটিতে দুই হাজারের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হতো। তবে বিজ্ঞানীদের শঙ্কা অনুযায়ী, শীত ফের হুমকি হয়ে আসছে ব্রিটিশদের জন্য। কারণ শীতে করোনার জীবাণু দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে এতে অনেকক্ষণ ঘরবন্দী থাকলেও সংক্রমণ ঝুঁকি থাকবেই। ভারতে আক্রান্ত ৯ লাখ ছাড়াল : ভারতে প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যে আক্রান্ত শনাক্ত ৯ লাখ পেরিয়ে গেছে। সর্বশেষ এক লাখ আক্রান্তে সময় লেগেছে মাত্র চার দিন। এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ। বৈশ্বিক সংক্রমণের তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরই ভারতের অবস্থান। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৮ হাজার ৪৯৮ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৯ লাখ ৬ হাজার ৭৫২ জন। আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাণহানির সংখ্যাও বেড়েছে। এক দিনে করোনায় মারা গেছে ৫৬৩ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেল ২৩ হাজার ৭২৭ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গেছে ১০ হাজার ৪৮২ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণহানি হয়েছে ৩ হাজার ৪১১ জনের। গুজরাটে ২ হাজার ৫৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়। তামিলনাড়ুতে মৃত্যু সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশে ৯৫৫ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৯৫৬ জন, কর্নাটকে ৭৫৭ জন, মধ্যপ্রদেশে ৬৬৩ জন ও রাজস্থানে ৫২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্যটিতে মোট আক্রান্ত হলেন ২ লাখ ৬০ হাজার ৯২৪ জন। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৪২ হাজার ৭২২ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৪০ জন। সংক্রমণে চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাটে মোট আক্রান্ত ৪২ হাজার ৭২২ জন। এ ছাড়া কর্নাটক ৪১ হাজার ৫৮১ জন, উত্তরপ্রদেশে ৩৮ হাজার ১৩০ জন, তেলেঙ্গানায় ৩৬ হাজার ২২১ জন এবং পশ্চিমবঙ্গে ৩১ হাজার ৪৪৮ আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও আশানুরূপ। মোট আক্রান্তের ৬৩ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৯৮৯ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৫ লাখ ৭১ হাজার ৪৬০ জন সুস্থ হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর