সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

নৈসর্গিক তুরাগ নদ

মোস্তফা কাজল

নৈসর্গিক তুরাগ নদ

ভরা বর্ষায় নৈসর্গিক রূপ ধারণ করেছে তুরাগ নদ। অনেকে বলছেন, দেখতে মনে হচ্ছে এ যেন নতুন এক পরিবেশ। এ নদের অবস্থান রাজধানীর উপকণ্ঠে। চলমান বর্ষায় নদের দু-পাশ পানিতে একাকার। পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেকে নৌকায় ঘোরাঘুরি ও আনন্দভ্রমণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এমন আকর্ষণীয় পরিবেশ দেখতে মিরপুর বেড়িবাঁধ এলাকার নদের তীরে প্রতিদিন অসংখ্য প্রকৃতিপ্রেমীর আগমন ঘটছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রায় তিন মাসের মতো সাধারণ মানুষ ঘরবন্দী ছিলেন। এখন একটু-আধটু চলাফেরার সুযোগ পেয়ে এ এলাকায় আনন্দভ্রমণে ছুটে আসছেন। বেড়িবাঁধ এলাকায় দাঁড়ালে মনে হবে বাতাসের কারণে নদের পানি আছড়ে পড়ছে তীরে। এ ছাড়া এ নদের দু-পাশ থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ হওয়ার কারণে নদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। নদের পাশের গাছ-গাছালির সবুজের সমারোহ এমন আবহ সৃষ্টি করেছে, যা সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশকে এক অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করে তুলেছে। এমন অপরূপ দৃশ্য দেখার জন্য প্রতিদিন তুরাগ নদের তীরে অবস্থিত মিরপুর বেড়িবাঁধের শিন্নিরটেক, বিরুলিয়া ও আশুলিয়া এলাকায় ছুটে আসছেন অনেকে। এ নদের এক পাশে মিরপুর ও অপর পাশে সাভার উপজেলা। মূলত আমিনবাজার ব্রিজ থেকে টঙ্গি ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা বর্ষাকালে নান্দনিক রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে এ এলাকায় সাধারণ মানুষের আগমন শুরু হয়। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত অনেকে এখানে সময় কাটান। কেউ আসেন ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে। আবার কেউ আসেন সিএনজি ট্যাক্সিতে। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবার অনেকে মাস্ক পরে আসছেন। এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে গতকাল সরেজমিন সেখানে গিয়ে। এ বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন নদীতে নৌকা ভ্রমণে গেলে চোখে পড়বে দু-পাশের দিগন্তবিস্তৃত খোলা প্রান্তর, সবুজ গাছপালার সারি। এ ছাড়া দূরে দেখা যাবে সবুজ গ্রাম আর রুপালি পানির নদী। বাঁধকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বাঁশ ও কাঠের কাঠামোর ওপর দাঁড়ানো জলে ভাসা বিভিন্ন রেস্তোরাঁ এবং ছোট ছোট পার্ক। বেড়িবাঁধের মাঝামাঝিতে নেভারল্যান্ড রেস্তোরাঁর লাগোয়া ময়ূরসদৃশ নৌযানটি আগত অনেকের নজর কাড়বে। এটি একটি আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ভ্রমণ তরী। নৌকাভ্রমণকে আরামদায়ক করতে রেস্তোরাঁয় সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ব্যস্ত জীবনের খ-কালীন অবসরে এক দিন বা এক ঘণ্টার জন্য নৌভ্রমণের যাবতীয় ব্যবস্থা করে থাকে এম বি ময়ূরী নামের নৌযানটি। এই নৌযানে রয়েছে ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মাস্টার রুম, তিনটি ওয়াশ রুম ও দুটি ভিআইপি কেবিনসহ দেশি-বিদেশি খাবারের সব ব্যবস্থা। সঙ্গে মিলবে সব ধরনের সেফটি ইকুইপমেন্ট। এ বেড়িবাঁধ এলাকায় সব সময় পুলিশের নজরদারি থাকে। এখানে রয়েছে শতবর্ষী কিছু বটগাছ। অনেকে নাটক ও সিনেমার শুটিংয়ের জন্য এখানে ছুটে আসছেন। বেড়িবাঁধে নৌকায় ভ্রমণ আপনাকে দেবে অনাবিল আনন্দ।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর