বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাট বসছে ১৭টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে এবার কোরবানির পশুর হাট বসছে ১৭টি। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১টি ও উত্তর সিটি করপোরেশনে ৬টি। করোনা মহামারীর কারণে এ বছর পশুর হাট সীমিত করা হয়েছে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে ২৪-২৫টি পশুর হাট বসলেও এ বছর ছোট পরিসরে আয়োজন করেছে উত্তর আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট পরিচালনার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যবিধিও ঘোষণা করা হয়েছে। হাটের সংখ্যা কম হওয়ায় বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ব্যর্থ হলে ইজারা বাতিল করা হবে। জানা যায়, শুরুতে ২৬টি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই সিটি। সেখান থেকে নেমে এসে এখন ঢাকা উত্তর সিটিতে ছয়টি এবং দক্ষিণে মাত্র ১১টি হাট বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। বাঁশ, খুঁটি ও শামিয়ানা নিয়ে ব্যস্ত ইজারাপ্রাপ্ত ও ব্যাপারিরা। ২৭ জুলাই কোরবানির হাট শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণে উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ মাঠ ও আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ লেদার টেকনোলজি কলেজ মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট, কমলাপুর লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠ-সংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ, আফতাবনগর ব্লক-ই, এফ, জির সেকশন ১ ও ২ নম্বর এলাকা, মেরাদিয়া বাজার, দনিয়া কলেজ মাঠ-সংলগ্ন খালি জায়গা, ধূপখোলা মাঠ, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল-সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আমুলিয়া মডেল টাউনের খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ-সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা। উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ছয়টি পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে একটি স্থায়ী হাট ও পাঁচটি অস্থায়ী হাট। স্থায়ী হাটটি গাবতলীতে বসবে। অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে- উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গা; কাওলা শিয়ালডাঙ্গা-সংলগ্ন খালি জায়গা; ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ-সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা; ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট; এবং উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা। হাট ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেশ কিছু গাইডলাইন দিয়েছে। হাটের প্রবেশপথে বাধ্যতামূলক হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে, মাস্ক পরতে হবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, করোনা মহামারীর এ দুর্যোগে রাজধানীসহ দেশের সব পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট স্থানে পশুর হাট বসানো হবে। রাস্তার ধারে কোনো ধরনের পশুর হাট বসানো যাবে না। যেসব স্থানে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট বসবে সেখানে ক্রেতা-বিক্রেতাকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। প্রতিটি হাটে মোবাইল কোর্ট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এদিকে গতকাল কোরবানি পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য শর্ত বাস্তবায়নের জন্য ইজারাগ্রহীতাদের প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম কড়া নির্দেশ প্রদান করেন। বিকালে গুলশানের ডিএনসিসির নগর ভবনে ছয়টি পশুর হাটের ইজারাগ্রহীতাদের ডেকে এ নির্দেশ প্রদান করেন তিনি।

 মেয়র বলেন, করোনাভাইরাসের গণসংক্রমণ এড়াতে প্রত্যেক ইজারাগ্রহীতাকে কোরবানি পশুর হাটে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় ইজারা বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, হাট মনিটরিং করার জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা হাটগুলো প্রতিদিন পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া প্রতিটি হাটে একটি করে মোবাইল কোর্ট থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি ও অন্যান্য শর্ত মানা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে একটি করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও ষাটোর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের কোরবানির পশুর হাটে না যাওয়ার অনুরোধ করেছেন। যারা কোরবানির পশুর হাটে যাবেন, তারা মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পরে যাবেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন সেই অনুরোধ করছেন।

অনলাইনে গরুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে : ক্রেতারা বলছেন, অনলাইনে গরুর দাম বেশি। এই দামে তাদের পোষাবে না। জানা গেছে, অনলাইনে ৯০ কেজি গোশত হবে এমন একটি গরুর দাম লিখে রাখা হয়েছে ৬০-৬৬ হাজার টাকা। প্রতি কেজি গোশতের দাম পড়বে ৬৬৬ টাকা। অথচ বাজারে গোশতের কেজি ৫৫০-৫৭০ টাকা। অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘এরই মধ্যে গরুর সর্বোচ্চ দাম ধরে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্রেতারা জ্যান্ত গরুর ক্ষেত্রে (লাইভ গরু) ৪০০ কেজির নিচে প্রতি কেজি ৩৭৫ টাকা, ৪০০ থেকে ৫০০ কেজির মধ্যে প্রতি কেজি ৪২৫ টাকা এবং ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি বা তার বেশি ওজনের গরু ৪৭৫ টাকা কেজি দরে কিনবেন। এটা সর্বোচ্চ দাম, এর ওপরে যাবে না।’

সর্বশেষ খবর