শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যু ঢাকায় সর্বনিম্ন ময়মনসিংহে

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ২৫৪৮ মৃত্যু ৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল আরও ৩৫ জনের। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২ হাজার ৮৩৬ জনে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৭২ জনেরই (৪৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ) মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সর্বনিম্ন ৫৮ জনের (২ দশমিক ০৫ শতাংশ) মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। ময়মনসিংহে কেউ মারা যায়নি।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় আরও ২ হাজার ৫৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৮ জনে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এদিকে বর্তমানে সারা দেশে দৈনিক শনাক্তের হার ২১ থেকে ২৫ শতাংশ হলেও দেশের কয়েকটি জেলায় শনাক্তের হার মাঝেমধ্যেই ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে চাঁদপুরে শনাক্তের হার ছিল ৫৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তার আগের দিন  ছিল ৫২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। তার আগের দিন ছিল ৬৪ শতাংশ। ব্রিফিংয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ লাখ ৯১ হাজার ৩৪টি। এতে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৮ জন। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ। তবে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৫ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭৬৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ১ লাখ ২০ হাজার ৯৭৬ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী। এদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব চারজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব আটজন, ষাটোর্ধ্ব ২২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ছিলেন ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ছয়জন, খুলনা বিভাগের ছয়জন, সিলেট বিভাগের চারজন, রংপুর বিভাগের চারজন, বরিশাল বিভাগের তিনজন এবং রাজশাহী বিভাগের একজন ছিলেন। এর মধ্যে ৩২ জন মারা যান হাসপাতালে, তিনজন বাড়িতে। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ২ হাজার ৮৩৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১ হাজার ৩৭২ জন (৪৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ), চট্টগ্রাম বিভাগের ৭০৭ জন (২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ), খুলনা বিভাগের ১৯৪ জন (৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ), রাজশাহী বিভাগের ১৫৯ জন (৫ দশমিক ৬১ শতাংশ), সিলেট বিভাগের ১৩৩ জন (৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ), বরিশাল বিভাগের ১০৯ জন (৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ), রংপুর বিভাগের ১০৪ জন (৩ দশমিক ৬৭ জন) ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৫৮ জন (২ দশমিক ০৫ শতাংশ) ছিলেন।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভিন্ন জেলার সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে করোনা সংক্রমণের সবশেষ পরিস্থিতি। চাঁদপুর : ২৪ ঘণ্টায় ৩১টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে আরও ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে সদরে ১০ জন, ফরিদগঞ্জে ছয়জন ও হাইমচরে একজন শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৯৪ জনের। মারা গেছেন ৭১ জন। কুমিল্লা : নতুন করে ৩১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় কুমিল্লায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১০৮ জনে। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬ জন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে নারীসহ আরও পাঁচজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন করোনা পজিটিভ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ১৩১ জন।

রাজশাহী বিভাগ : শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৪০৭ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৯৬ জন, বগুড়ার ১৮৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৫ জন, পাবনার ছয়জন, নওগাঁর পাঁচজন ও সিরাজগঞ্জের একজন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৯৬ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৩ জনের বাড়ি রাজশাহী। এ ছাড়া বগুড়ার ৫০ জন, নওগাঁর সাতজন, নাটোরের একজন, জয়পুরহাটের তিনজন, সিরাজগঞ্জের ৩৪ জন এবং পাবনার ১৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় একজনকে নিয়ে বিভাগে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে। এ পর্যন্ত বগুড়ায় সর্বোচ্চ ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহীতে ১৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুজন, নওগাঁয় ১৩ জন, নাটোরে একজন, জয়পুরহাটে দুজন, সিরাজগঞ্জে ১০ জন এবং পাবনায় নয়জন মারা গেছেন। পুরো বিভাগে এখন শনাক্ত করোনা রোগী ১১ হাজার ১০৪ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৪২০ জন শনাক্ত হয়েছেন বগুড়ায়। এ ছাড়া রাজশাহীতে ২ হাজার ৫১২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১৮, নওগাঁয় ৮৫১, নাটোরে ৩৮৮, জয়পুরহাটে ৬৫৯, সিরাজগঞ্জে ১ হাজার ২১৪ জন এবং পাবনায় ৭৪২ জন শনাক্ত হয়েছেন। তবে গতকাল সকালে সরকারি ব্রিফিংয়ে বগুড়ায় একজনের মৃত্যুর খবর থাকলেও দিনের বিভিন্ন সময়ে জেলায় চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে বগুড়া শহরের বাদুরতলায় জাহাঙ্গীর আলম (৬৫) নামে ডিপজল পরিবহনের এক টিকিট মাস্টারের মৃত্যু হয় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।

একই হাসপাতালে মারা যান শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাটের জোড়া ম লপাড়ার চাল ব্যবসায়ী মনসুর আলী (৬৫)। সিরাজগঞ্জের উল্লাহপাড়ার জিকিড়ার বাসিন্দা নারায়ন চন্দ্র (৮০) মারা যান মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে। টিএমএসএস হাসপাতালে মারা যান শেরপুর উপজেলার শাহপাড়ার দীপা রানী সাহা (৬৫)।

গাজীপুর : এ জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গাজীপুরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৪ হাজার ১২৪ জনে। এ পর্যন্ত জেলায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭২৩ জন। মারা গেছেন ৫১ জন।

দিনাজপুর : এ জেলায় ১০৪টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে দুজন মৃতসহ ২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় শনাক্ত হলো ১ হাজার ৩৩৭ জন করোনা রোগী। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮০৮ জন।

বাগেরহাট : ফকিরহাট উপজেলার মাসকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল আজিজ (৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল নিজ বাড়িতে মারা গেছেন। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বাগেরহাটে করোনা শনাক্ত হলো মোট ৫১৫ জনের দেহে। মারা গেছেন ১১ জন। এর মধ্যে শুধু ফকিরহাট উপজেলায়ই করোনা আক্রান্ত কয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর