শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

৮৬ বছর পর তুরস্কের মসজিদে জুমার নামাজ

প্রতিদিন ডেস্ক

৮৬ বছর পর তুরস্কের মসজিদে জুমার নামাজ

৮৬ বছর পর আবার নামাজ আদায় হবে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপ নেওয়া আয়া সাফিয়ায়। তাইতো গতকাল জুমার নামাজে জায়গা পেতে আগের রাত থেকে অনেক মুসল্লি এর আশপাশে অবস্থান নেন। ষষ্ঠ শতাব্দীর তৈরি স্থাপত্যটি ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল অটোমান বিজয়ের পর মসজিদে রূপান্তরিত হয়। পরে কামাল আতাতুর্ক সেটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করেন -এএফপি

৮৬ বছর পর আবারও তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী আয়া সোফিয়া মসজিদে গতকাল জুমার নামাজ আদায় হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় মসজিদে জায়গা না পেয়ে প্রাঙ্গণসহ আশপাশের রাস্তায় নামাজ আদায় করেন অনেকে। করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোরভাবে মানা হয় সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি। বিবিসি।

ইতিহাসের সাক্ষী হতে আয়া সোফিয়ায় নামাজে উপস্থিত ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। নামাজের আগে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে কোরআন তেলাওয়াত করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সুমধুর কণ্ঠে তেলাওয়াত করেন সুরা ফাতেহা এবং সুরা বাকারার কিছু অংশ।

উল্লেখ্য, ৫৩৭ সালে আয়া সোফিয়া নির্মিত হয়। ইস্তাম্বুল বিজয়ের আগ পর্যন্ত ৯১৬ বছর আয়া সোফিয়া গির্জা ছিল। ১৪৫৩ সালের ১ জুন মসজিদে রূপান্তরিত আয়া সোফিয়ায় প্রথমবার জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪৫৩ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বছর মসজিদ ছিল। ১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানোর জন্য ডিক্রি জারি করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কামাল আতার্তুকের মন্ত্রিসভা। গেল বছর এক নির্বাচনী সভায় জাদুঘর থেকে সোফিয়াকে মসজিদে ফেরানোর ঘোষণা দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর বানানো মস্তবড় ভুল ছিল। প্রেসিডেন্টের ঘোষণার বিরোধিতা করে আদালতে মামলা ঠুকে দেয় একটি বেসরকারি সংস্থা।  শুনানি শেষে ১০ জুলাই তুরস্কের আদালত মামলা খারিজের পাশাপাশি আতার্তুক সরকারের সেই ডিক্রি বাতিল করে। রায় দেন মসজিদে ফিরিয়ে আনার পক্ষে। যার মাধ্যমে আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়। ওইদিনই আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের পুনঃ ঘোষণা দেন এরদোগান। জাদুঘরে রূপ দেওয়ার আগে ৫০০ বছর স্থাপনাটি মসজিদ ছিল। ফলে ৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেলেন মুসলমানরা।

১৯৮৫ সালে জাদুঘর থাকাকালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্বঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আয়া সোফিয়া অন্যতম। ১৬ জুলাই তুরস্কের ধর্মবিষয়ক অধিদফতর মসজিদে রূপান্তরিত হওয়ার পরে আয়া সোফিয়া পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সহযোগিতা প্রোটোকল স্বাক্ষর করে। প্রোটোকলের অধীনে সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের কাজ তদারকি করবে। ধর্মবিষয়ক অধিদফতর ধর্মীয় বিষয়টি তদারকি করবে। মূল্যবান এ স্থাপনাটি বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর