রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই দলগুলোর

চলতি সপ্তাহে শেষ হচ্ছে সময়

গোলাম রাব্বানী

চলতি সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এখনো হিসাব জমা দেয়নি। এমনকি দলগুলোর হিসাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেই বললেই চলে। অনেক দলের নেতারা হিসাব দেওয়ার সময়সীমাও ভুলে গেছেন। মাসের শুরুতে হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত ৪১ দলকে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিলেও এখন মাত্র ১টি দল হিসাব দিয়েছে। আরেকটি হিসাব দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে। সেই হিসাবে এখনো ৩৯টি দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে বিগত কয়েক মাস দলগুলো ঠিকঠাক দলীয় অফিসের কার্যক্রম চালাতে পারেনি। এ ছাড়া ১ আগস্ট ঈদ থাকায় দলগুলো সময়মতো হিসাব দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে। যদিও গত বছরে হিসাব দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার আগের দুই দিনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি হিসাব দিয়েছিল। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, বড় দলগুলো হিসাব জমা দেয়নি, হিসাব দেওয়ার জন্য এখনো সময়ও চায়নি। এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি হিসাব জমা দিয়েছে এবং একটি মাত্র দল সময় চেয়েছে। তারা বলছেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে দলের হিসাব জমা দিতে হবে। এ পর্যন্ত ১টি দল হিসাব জমা দিয়েছে। কিন্তু কোনো বড় দল হিসাব জমা দেয়নি এমনকি সময়ও চায়নি। তবে রাজনৈতিক দলগুলো হিসাব দেওয়ার সময় চেয়ে আবেদন করলে সময় বাড়ানো হতে পারে।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, ইসির নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে এ হিসাব জমা দিতে হবে। চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে দলের তহবিল সংগৃহীত হলে কার বা কাদের কাছ থেকে কী ধরনের চাঁদা আদায় করা হয়েছে, তাও নির্ধারিত ফরমের ছক অনুযায়ী জানাতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, কোনো দলই এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়নি। এর মধ্যে অধিকাংশ দলের কর্তাব্যক্তিরা জানেনই না হিসাব জমা দেওয়ার সময় প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এদিকে নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেসব দল অডিট রিপোর্টের কপি জমা দেবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ২০০৮-এর ধারা ৯ (খ)তে বলা হয়েছে, প্রতি বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অব্যবহিত পূর্বের বছরের সংশ্লিষ্ট দলের আর্থিক লেনদেন একটি রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি ফার্ম দিয়ে অডিট করিয়ে সেই রিপোর্টের একটি কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল যদি পরপর তিন বছর কমিশনে তথ্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয় তবে সেই দলের নিবন্ধন বাতিল করার বিধান রয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে কবে হিসাব দেওয়া হবে। নাকি জমা দেওয়ার জন্য সময় চাওয়া হবে। বিএনপির একজন নেতা জানিয়েছেন, হিসাব জমার বিষয়ে দু- এক দিনের মধ্যে দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। অনেক দলের নেতাদের কাছে হিসাব জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলেও প্রথমেই কিসের হিসাব, কোন হিসাব এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এরপর তাদের মাথায় হিসাব জমা দেওয়ার বিষয়ে চিন্তা এসেছে। জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, নিবন্ধিত দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে সুনিদির্ষ্ট ফরম পাঠানো হয়েছে দলগুলোর কাছে। আইন অনুযায়ী নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে হিসাব জমা দিতে হবে। তবে কোনো দল সময় বাড়ানোর আবেদন করলে তখন দেখা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর