সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় চিকিৎসক প্রসূতি নবজাতক ও জেল সুপারের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসক প্রসূতি মা ও তার এক দিন বয়সী নবজাতক এবং ময়মনসিংহ কারাগারের জেল সুপারের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই চিকিৎসকের নাম ডা. শেফা ইসলাম তুলি (২৬)। তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের ১৫তম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। আর জেল সুপার মো. আবু জাহেদ (৫৮) ময়মনসিংহ কারাগারে কর্মরত ছিলেন। পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল সকালে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শেফা ইসলাম তুলি। এই মৃত্যুর খবরে সারা দেশের চিকিৎসক সমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে। এর আগে শনিবার তার এক দিন বয়সী নবজাতক সন্তানও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। শেফা ইসলামের সহপাঠী নাফিসা তাহসীন তরি গণমাধ্যমকে জানান, গত শুক্রবার দুপুরে স্কয়ার হাসপাতালে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন শেফা ইসলাম তুলি। সে সময় শিশুটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক ছিল। শিশুটিকে নবজাতক আইসিইউতে (এনআইসিইউ) ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। শনিবার রাত ১০টার দিকে শিশুটি মারা যায়। আর এক দিন পর মারা গেলেন শেফা ইসলাম। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চি?কিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. আবু জাহেদ মারা গেছেন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগে গত ১১ জুলাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় তাকে। আবু জাহেদ ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে চলতি বছরের ২৪ মার্চ যোগদান করেছিলেন। তার নিজ জেলা মেহেরপুর।

ডিআইজি প্রিজন জাহাঙ্গীর কবির জানান, ১০ জুলাই দুপুরে হঠাৎ করেই অসুস্থ বোধ করেন সিনিয়র জেল সুপার আবু জাহেদ। এ সময় তাকে কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জনের পরামর্শে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। পরদিন তার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই দিনই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ দিন পর তিনি মারা যান। কারা অধিদফতর জানায়, ১৯৯১ সালে কারা বিভাগে যোগদান করেন মো. আবু জাহেদ। পর্যায়ক্রমে যশোর ও কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং পাবনা, রাঙামাটি, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাট, নেত্রকোনা, বগুড়া, ঝিনাইদহ, পাবনা ও সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে যান। তার মৃত্যুতে কারা বিভাগের পক্ষ থেকে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশা, ময়মনসিংহ বিভাগের ডিআইজি প্রিজন জাহাঙ্গীর কবির ও জেলার আবদুল্লাহ ইবনে তোফাজ্জল হোসেন খান গভীর সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ খবর