সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

রিমান্ডে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না জাফরিন মামলা ডিবিতে

মশিয়ালীতে হত্যায় ১০ দিনেও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ট্রিপল মার্ডারের ১০ দিন পরও খুলনার মশিয়ালীতে মূল অভিযুক্ত জাকারিয়া হোসেন ও তার ভাই মিল্টনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া হত্যার ঘটনায় একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হলেও তা উদ্ধার হয়নি। এদিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার আরেক আসামি জাফরিন পুলিশকে বিভ্রান্তকর তথ্য দিচ্ছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়েও অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। অন্যদিকে আসামিদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে পুলিশের ওপর চাপ বাড়ছে। সাত দিনের মধ্যে সব আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে নগর আওয়ামী লীগ। একই দাবিতে এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করছেন হতাহতের পরিবার ও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। ফলে তদন্তে গতি বাড়াতে মামলাটি মহানগর ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, ১৬ জুলাই রাতে জাকারিয়া-জাফরিনদের গুলিতে একই সঙ্গে তিনজন নিহত হলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামবাসী। উত্তেজিত জনতা তাদের বসতবাড়ি-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় এবং জাকারিয়ার স্বজন জিহাদ শেখকে পিটিয়ে হত্যা করে। এদিকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার জাফরিন, আরমান, জাহাঙ্গীর ও রহিম আকুঞ্জিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য উদ্্ঘটিত হয়নি। কেএমপির ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাফরিন একেক সময় একেক তথ্য দিচ্ছেন। সর্বশেষ ওই রাতে পালানোর আগে গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান এবং আরেক আত্মীয়ের কাছে অস্ত্র জমা রাখার কথা স্বীকার করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ সেখান থেকেও অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। তবে দায়িত্বভার পেয়ে তদন্তে নতুন ছক কষছেন কেএমপির উপকমিশনার (ডিবি) বি এম নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার দুই দিকে টার্গেট নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হলে প্রয়োজনে তাদের পুনরায় রিমান্ডে আনা হবে। এদিকে ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় পুলিশের দুর্বলতাকে দায়ী করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেছেন, মশিয়ালীতে পুলিশের আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল। তিনি সাত দিনের মধ্যে অস্ত্র উদ্ধার করে অপরাধীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘একটি সুবিধাবাদী চক্র দলের ভিতর অনুপ্রবেশ করে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য দলের ক্ষতি সাধন করছে। তাদের সম্পর্কে আমাদের আরও সজাগ থাকতে হবে। অপরাধীর কোনো দল থাকতে পারে না। অপরাধী বা হত্যাকারী যে-ই হোক না কেন, তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।’ মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, ‘রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গ্রেফতার ব্যক্তিদের নতুন করে রিমান্ডের বিষয়ে আগামীকাল (আজ) সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, ১৯ জুলাই জাফরিনকে আট দিনের এবং আসামি আরমান ও জাহাঙ্গীরকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। গ্রেফতার রহিম আকুঞ্জিকে নেওয়া হয় চার দিনের রিমান্ডে।

সর্বশেষ খবর