বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

ফিরছে মানুষ নেই স্বাস্থ্যবিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফিরছে মানুষ নেই স্বাস্থ্যবিধি

সদরঘাট টার্মিনালে গতকাল উপচে পড়া ভিড় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই গ্রামে গিয়েছিলেন লাখো কর্মজীবী মানুষ। ছুটি শেষে আবারও তারা কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। এ কারণে দেশের সড়ক-মহাসড়ক, নৌ-বন্দরসহ স্টেশনে-টার্মিনালে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা গেছে। ফেরিঘাটগুলোতেও দেখা গেছে মানুষের ভিড়। তবে অধিকাংশ পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। গতকাল রাজধানীর সদরঘাট, সায়েদাবাদ, কল্যাণপুর-গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সকালে সদরঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় ফেরা অধিকাংশ লঞ্চেই ছিল কর্মজীবী মানুষের ভিড়। লঞ্চের ডেক থেকে শুরু করে কেবিন এমনকি কেবিনের সামনের গলিপথেও মানুষের গাদাগাদি ভিড় দেখা গেছে। টার্মিনালের প্রতিটি পন্টুনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনো নমুনা দেখা যায়নি। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্কও। করোনার প্রকোপ না কমলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে অনেকটাই শিথিলতা দেখা যায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ফেরা অনেক লঞ্চেই যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা ছিল না বলেই জানান অনেক যাত্রী। জানতে চাইলে বরিশাল থেকে আসা যাত্রী আবদুল হাকিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকায় একা থাকি, তাই বাধ্য হয়েই ঈদে বাড়িতে গিয়েছিলাম। সোমবার থেকেই অফিস খুলেছে, তবে আমি আজ যোগ দেব। লঞ্চের ভিড় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লঞ্চে তো পা রাখার জায়গা নেই। কোনোভাবে একটি কেবিনের সামনে বিছানা করে চলে এসেছি। পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় ফেরা মিজানুর রহমান বলেন, করোনার মধ্যে ঈদ খুব ভালোভাবে কাটানো সম্ভব নয়, তারপরও পরিবার-পরিজন আর বন্ধুদের সঙ্গে খুব ভালো কেটেছে দিনগুলো। আরও কয়েকদিন থাকার ইচ্ছা থাকলেও অফিস খুলে যাওয়ায় পারলাম না।

বরগুনা থেকে ফেরা আমিনুল ইসলাম বাদল বলেন, শুনেছিলাম লঞ্চে ওঠার সময় নাকি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে, কই তেমন কোনো ব্যবস্থা তো দেখলাম না।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদী-বন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, লঞ্চ মালিকদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে। হ্যান্ড স্যানিটাইজের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক। আমরা বিষয়টি দেখছি।

দুপুরে সায়েদাবাদ ও মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে ভিড় কিছুটা কম দেখা গেলেও অধিকাংশ বাসেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী বাসের অর্ধেক সিট ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও অধিকাংশ বাসেই সব সিট ভর্তি করে এসেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, যারা বাসে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন তারা পাশাপাশি দুই সিট দখল করেই এসেছেন। যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মানতে রাজি হয়নি।

পরিবহন চালকরা জানিয়েছেন, ঈদের আগমুহূর্তে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ প্রায় একসঙ্গে ঢাকা ছাড়লেও ফেরার সময় আলাদা আলাদাভাবে ফেরেন। অনেকেই ঈদের ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি যোগ করে নেন। কেউ কেউ ঈদ শেষে অফিস ধরতে ঢাকায় ফিরলেও তাদের পরিবার বাড়িতে রেখে আসেন। সে কারণে ফেরার সময় সাধারণত যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম থাকে।

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সুনামগঞ্জ থেকে ফেরা যাত্রী আফজালুর রহমান বলেন, সোমবার থেকে অফিস খুলেছে, তবে বাসের টিকিট না পাওয়ায় আমি আসতে পারিনি। তাই আজ এসেছি। এখন ভিড় হবে দেখে, করোনার এই সময়ে স্ত্রী-সন্তানকে আপাতত বাড়িতেই রেখে এসেছি।

মহাখালী বাস টার্মিনালে নেত্রকোনা থেকে ফেরা সৈয়দ মিজানুর রহমান বাস কর্তৃপক্ষের ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, বাসে দুই সিটে একজন বসার কথা থাকলেও, তা মানা হয়নি। বাসে ওঠার সময় হাতও স্যানিটাইজ করায়নি তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর