বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

পাপিয়া ও স্বামীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ কমিশনের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন। এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেনসিয়াল স্যুট এবং চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫টি কক্ষে অবস্থান করে খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, বারের ব্যয় বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬০ টাকা বিল পাপিয়া নিজেই নগদ পরিশোধ করেন। পাপিয়া বিলাসবহুল জীবনযাপন পছন্দ করতেন উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, ওয়েস্টিন হোটেলে থাকাবস্থায় তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেছেন।

এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মাসিক ৫০ হাজার টাকা করে ৩০ লাখ টাকা বাসা ভাড়া দিয়েছেন। গাড়ির ব্যবসায় এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে। র‌্যাব তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করে। মফিজুর রহমান সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের একটি গাড়ি আছে, যার দাম ২২ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে তাদের নামে ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে দুদকের মামলায় বলা হয়, এসব অর্থ তারা অপরাধজনক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আয় করেছেন, যা তাদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ। মামলায় শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত ২০ জুলাই পাপিয়া ও তার স্বামী মো. মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে কাশিমপুর জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা। গত ২২ ফেব্রুয়ারি শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাকা ও নরসিংদীতে পাপিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। সে সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটি টাকার ওপরে। গ্রেফতারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে জাল নোটের একটি এবং অস্ত্র ও মাদক আইনে আরও দুটি মামলা করে র‌্যাব। আর মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি আরেকটি মামলা করে। এরপর দুদকও পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর