শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

মাচায় আঙ্গুর চাষ

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

মাচায় আঙ্গুর চাষ

দেশের মাটিতে আঙ্গুর চাষ সত্যিই অভাবনীয়। সবুজ পাতার নিচে বাঁশের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙ্গুর ফল। যা দেখে যে কোনো মানুষের চোখ জুড়িয়ে যাবে। আর এ দৃশ্য চোখে পড়ে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের পোস্ট অফিস মোড় এলাকার সেমন্তী হাটবাজারের আঙ্গিনায়। উপজেলায় আঙ্গুর চাষ অকল্পনীয়, তারপর আবার মিষ্টি। আঙ্গুর অনেকটা গল্পের মতো হলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তরুণ উদ্যোক্তা ও আইনজীবী সামিউন নবী শামিম। তিনি প্রথম মাচা পদ্ধতিতে আঙ্গুর চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। গাছে ব্যাপক ফলও এসেছে। তার প্রত্যাশা অচিরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে  বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষ শুরু হবে। জানা গেছে, সামিউন নবী শামিম ২০১৯ সালে রাজশাহী থেকে ২টি লাল ও ২টি কালো আঙ্গুরের চারা (কাটিং) নিয়ে আসেন। সেই চারা রোপণ করেন নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায়। গত বছরের শেষের দিকে গাছে প্রথম ফল আসে। দুই বছরের মাথায় প্রথমবারের তুলনায় ৫/৬ গুণ বেশি আঙ্গুর ফল ধরে। আঙ্গুর ফল যখন পাকা শুরু করে, তখনই এলাকায় হইচই পড়ে যায়। কারণ মিষ্টি আঙ্গুর ফলের চাষ ইতিপূর্বে জেলার কোথাও হয়নি। সম্প্রতি উপজেলা কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায় শামিমের আঙ্গুর বাগান পরিদর্শন করেন এবং এলাকার অনেকেই দেখতে আসছে। আঙ্গুর গাছ দেখতে আসা দর্শনার্থী ও এলাকাবাসী জানান, শামিমের আঙ্গুর বাগানের মাধ্যমে আমরা ফরমালিনমুক্ত সুস্বাদু আঙ্গুর খেতে পারছি। এখন দরকার উদ্যোগ নেওয়া। শামিম জানান, ৪টি আঙ্গুরের চারা রোপণের মাধ্যমে শুরু করেন আঙ্গুর বাগান। গত বছর তার গাছে প্রায় ৬ কেজি ফল আসে।

 এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। আলো বাতাস ও পর্যাপ্ত রোদের তাপ থাকে এমন জায়গাতে রোপণ করলে ফল মিষ্টি হয়। গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার দিয়ে গাছ রোপণ করতে হবে এবং নিয়মিত গাছের যত্ন নিতে হবে। গাছের ডাল দেখে মনে হবে তা শুকনো। ভুলেও এ ডালপালা ভেঙে ফেলা যাবে না। শীতের শেষে গাছের ডালে নতুন পাতা ও কুশি বের হবে আর তাতেই ফুল ধরবে এবং পরিণত বয়সে তা আঙ্গুরে রূপান্তিত হবে। এ সময় গাছের পাতায় মকর নাশক স্প্রে করতে হবে। কারণ এক জাতীয় পোকা এই গাছের পাতা ও ফল খেয়ে ফেলে। তাই প্রতিনিয়ত খেয়াল রাখতে হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, আইনজীবী সামিউন নবী শামিমের আঙ্গুর বাগান পরিদর্শন করা হয়েছে। আঙ্গুর চাষ করে ভালো ফলনও পেয়েছেন। কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হবে। আমাদের দেশে যে আঙ্গুরের জাতটি ভালো হয়ে থাকে তাতে বিচি থাকে। তবে মাটিভেদে এর স্বাদ কোনো এলাকায় খুব মিষ্টি আবার কোনো এলাকায় টক হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে আঙ্গুর চাষ বাণিজ্যিকভাবে করা যাবে কিনা তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বিজ্ঞানীরা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর