শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকায় বন্যা তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় বন্যা তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল

দেশের অন্যান্য জায়গার মতো ঢাকার ভিতরে পানি ঢুকে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে অনেক মানুষ। কমলা বেগমের ঘরসহ একমাত্র চলাচলের বাহন নৌকায় পানি উঠে যাওয়ায় পানি সেচে ফেলছেন। ছবিটি খিলগাঁও নাসিরাবাদের বাবুরজায়গা থেকে তোলা -জয়ীতা রায়

দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনো বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে থাকা তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি। ফলে নদ-নদী তিনটির উপচে পড়া পানিতে প্লাবিত ঢাকার নিম্নাঞ্চল। তবে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে বুড়িগঙ্গার পানি। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বালু, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পানি কিছুটা কমলেও বেড়েছে তুরাগের পানি। অন্যদিকে তিনটি নদ-নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাজধানীর প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে নামছে না পানি।

এতে গত কয়েক দিন ধরে পানিবন্দী হয়ে হয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন দুই সিটি করপোরেশনেরই নিম্নাঞ্চলের মানুষ।

গতকাল সকালে বালু নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার, তুরাগের পানি ৫০ সেন্টিমিটার ও শীতলক্ষ্যার পানি ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বুড়িগঙ্গার পানি আগে থেকেই বিপৎসীমার নিচে ছিল। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এক দিনের ব্যবধানে বালু নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার, শীতলক্ষ্যার পানি ১১ সেন্টিমিটার ও বুড়িগঙ্গার পানি ৭ সেন্টিমিটার কমেছে। শুধু তুরাগ নদের পানি এক সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে আজ থেকে তুরাগের পানিও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর পানি আর বাড়ার শঙ্কা কম। দুই দিন পর থেকে দ্রুত কমতে থাকবে। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসবে। তখন প্লাবিত এলাকা থেকে পানি দ্রুত নেমে যাবে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানিও দ্রুত কমছে। এ মাসের মধ্যে আর বন্যার আশঙ্কা নেই বলা যায়। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে আরেকটি ছোট বন্যা আসতে পারে।

এদিকে সরেজমিন রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের নিম্নাঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, অনেক ঘরই হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে। সেই পানিতে ভাসছে পলিথিন, মানববর্জ্য, প্লাস্টিকের বোতল। মানুষ মাচা তৈরি করে সেখানে চুলা রেখে রান্না করছে। পানির মধ্যে খানা-খন্দ বুঝতে অনেক এলাকায় হাঁটার রাস্তায় বাঁশ ও খুঁটি পুঁতে দিয়েছে এলাকাবাসী। তবে গত পরশুর চেয়ে গতকাল পানি কিছুটা কম দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখালী এলাকার বেশিরভাগ বাড়িতে পানি উঠে গেছে। তলিয়ে আছে অনেক রাস্তা। তবে এক দিনের ব্যবধানে গতকাল ডুবন্ত রাস্তার কিছু কিছু অংশ পানির ওপরে জেগে উঠেছে। অনেক মানুষ মালপত্র খাটের উপর রেখে ঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। একই অবস্থা দেখা গেছে সাঁতারকুল, বেরাইদ ও দক্ষিণ খান এলাকায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৭০, ৭১, ৭৩, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। খিলগাঁও, মান্ডা, কদমতলী, নলছাটা, দুর্গাপুর, তাম্বুরাবাদ, ধিৎপুর, খলাপাড়া, ঠুলঠুলিয়া, আমুলিয়া-মেন্দিপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তা এখনো পানিতে তলিয়ে আছে।

সর্বশেষ খবর