মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

পাখির কোলাহলে মুখরিত গ্রাম

আবদুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

পাখির কোলাহলে মুখরিত গ্রাম

সময়ের বিবর্তনে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী কবিতার সেই বাবুই পাখির বাসা। শুধু বাবুই পাখি নয়, প্রায় সব ধরনের পাখিই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। আর এই দুঃসময়ে বাবুই পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাউথনগর, কাঁঠালডাঙ্গী, ভাতুরিয়া ও রামপুর গ্রাম। প্রকৃতির অপরূপ শিল্পের কারিগর বাবুই পাখির বাসা বাতাসে দুলছে এ গ্রামগুলোতে। ভারত সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোর তাল-নারিকেল, বট-পাখুরির গাছে গাছে দেখা মিলছে বাবুই পাখির শৈল্পিক অট্টালিকা। চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য দেখতে ওই গ্রামগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থী ও পাখিপ্রেমীরা।

ভাতুরিয়া পুরগ্রামের শাকিল বলেন, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এসে এই গ্রামগুলোতে বাসা তৈরি করছে বাবুই পাখি। প্রকৃতির নৈসর্গিক এই দৃশ্য উপভোগের জন্য প্রতিদিন অনেকে আসছে গ্রামগুলোতে। পাখিপ্রেমী রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন, ফসলে কীটনাশক ব্যবহার আর জলবায়ুর পরিবর্তনে আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে পাখি ও পাখির বাসার সংখ্যা। ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও সাহিত্য। ঠাকুরগাঁও সুগার ক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি বিজ্ঞানী ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক ব্যবহারে পরিবেশ অসুস্থ হচ্ছে আর উৎপাদন খরচ বাড়ছে কৃষিতে। তিনি বলেন, পোকা দমন ও পরিবেশ সুস্থ রাখতে পাখির ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। সাহিত্যিক অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে বলেন, পাখি নিয়ে কবি সাহিত্যিকরা রচনা করেন গান-কবিতা-গল্প ও ছড়া। কিন্তু আজ বৈশ্বিক উষ্ণতায় হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র্য। তিনি আরও বলেন, ফসলে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, নির্বিচারে পাখি হত্যা, প্রাচীন বৃক্ষ নিধন ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে বংশবৃদ্ধি হচ্ছে না পাখির। তাই দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে পাখি। হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ জি এম আরিফ বেগ বলেন, হরিপুরে প্রাচীন ও উঁচু গাছের আধিক্যতার কারণে এই উপজেলায় পাখির সংখ্যা উল্লেখ করার মতো।

সর্বশেষ খবর