বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

নিয়মিত ট্রানজিটে প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ

এনবিআরের মতামত

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের জন্য নিয়মিত ট্রানজিট সুবিধার জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পণ্যের নিরাপত্তায় ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক লক ও কম্পিটারাউজড পদ্ধতিতে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষামূলক ট্রানজিট প্রক্রিয়া শুরুর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এক চিঠিতে এনবিআর বলেছে, ট্রানজিট/ট্রানশিপমেন্ট পণ্য চালানের কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজ করতে তারা কিছু সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এসব প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে। এরপর নিয়মিত ট্রানজিট চালু করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে এনবিআর। কাস্টসম সূত্রগুলো জানায়, নিয়মিত ট্রানজিট সুবিধা কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্তত ৩টি খাতে সংস্কার করতে হবে। ট্রানজিট, ট্রানশিপমেন্ট চুক্তির আলোকে প্রয়োজনীয় কাস্টমস সেবা প্রদানের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে, যা জারি হতে অন্তত আরও ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগতে পারে। ইলেকট্রনিক লক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া বর্তমানে যে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে বন্দরে পণ্যের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এই ‘অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড’ সিস্টেমে নতুন করে ট্রানজিট মডিউল সংযুক্ত করার সক্ষমতা নেই। এটি সংযুক্ত করতে হলে সিস্টেম আপগ্রেড করতে হবে। এতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে। এনবিআর সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যে ৪ কনটেইনার পণ্য পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশের ভূখ- ব্যবহার করে ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হলো, তাতে ইলেকট্রিক সিল ছিল না। বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধার জন্য যে এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) রয়েছে, সে অনুযায়ী ভারতীয় পণ্যবাহী কনটেইনারে ইলেকট্রনিক্স সিল ও লক ব্যবহার করতে হবে। এনবিআর জানায়, ইলেকট্রনিক সিল হচ্ছে অবৈধভাবে ঘষামাজা বা পরিবর্তন প্রতিরোধ সক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তির রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন ডিভাইসেস (আরএফআইডি)। এটি চাবি দিয়ে খুলতে ও বন্ধ করতে হবে। এই সিল থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পণ্য চালানটি কোথায় আছে, তা সহজেই শনাক্ত করা যায়। আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী ট্রানজিটে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান এ ধরনের সিল ও লক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে।  ফলে নিয়মিত ট্রানজিটের আগে এ বিষয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া বর্তমানে বন্দর থেকে পণ্যের চালান দ্রুত ও বিড়ম্বনা ব্যতীত ছাড়ের লক্ষ্যে কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম ও মোংলায় জাহাজের মেনিফেস্ট দাখিল, মেনিফেস্টের বিপরীতে বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল, পণ্য চালানের শুল্কায়ন, অ্যাসেসমেন্ট নোটিস জারি, শুল্কায়ন ও ফি পরিশোধ শেষে এক্সিট নোট ইস্যুসহ সব কার্যক্রম কাস্টমস কম্পিউটার সিস্টেমে (অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড) সিস্টেমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সম্পাদন করা হয়। নিয়মিত ট্রানজিট সুবিধা কার্যকরের আগে এই সিস্টেমে ট্রানজিট মডিউল সংযুক্ত করতে হবে বলেও জানিয়েছে এনবিআর-সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর