কারও ভিসার মেয়াদ চলে গেছে, আবার কারও মেয়াদ আছে আর সামান্য কদিন। কিন্তু ফিরে যেতে পারছেন না কর্মস্থল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে। ফিরে যাওয়ার টিকিট না পেয়ে দুই দিন ধরে তারা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সিলেট অফিসের সামনে বিক্ষোভ করছেন। চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত আবুধাবিগামী বিমানের সব কটি ফ্লাইটের সিট বুকিং হয়ে যাওয়ায় তাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে বিমান কর্মকর্তাদের। এমতাবস্থায় সিলেটে আটকা পড়া প্রায় চার হাজার আবুধাবি প্রবাসীকে ঘিরে ধরেছে অন্ধকার। প্রবাসে ফিরে যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। করোনা পরিস্থিতিতে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সিলেট বিভাগের কয়েক হাজার দুবাই ও আবুধাবি প্রবাসী আটকা পড়েন। ৪ জুলাই থেকে ফ্লাইট চালু হলে দুবাই ও আবুধাবি প্রবাসীরা সে দেশের সরকারের অনুমতি (অ্যাপ্রোভাল) সাপেক্ষে ফিরে যাওয়া শুরু করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান সপ্তাহে দুবাইয়ে পাঁচটি ও আবুধাবিতে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। মঙ্গলবার থেকে আবুধাবি প্রবাসীদের ফিরে যেতে ‘অ্যাপ্রোভাল’ লাগবে না- এমনটা ঘোষণার পর প্রবাসীরা ফিরে যেতে বিমান অফিসে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। গতকাল বুধবার ও আগের দিন মঙ্গলবার টিকিটের জন্য কয়েক হাজার প্রবাসী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সিলেট অফিসে যান। কিন্তু ইতিমধ্যে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বিমানের সব ফ্লাইটের টিকিট বুকিং হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাত্রীদের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সহস্রাধিক আবুধাবি প্রবাসী বিমান অফিসের সামনে আম্বরখানা-বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশ এসে তাদের শান্ত করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। মৌলভীবাজারের রাজনগর থেকে আসা আবুধাবি প্রবাসী রায়হান আহমদ জানান, চলতি মাসের মধ্যে তিনি আবুধাবি ফিরে যেতে না পারলে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু কোনোভাবেই বিমানের টিকিট ম্যানেজ করতে পারছেন না তিনি। কবে টিকিট মিলবে এর জবাবও দিতে পারছেন না বিমান অফিসের লোকজন। এ অবস্থায় আবুধাবিতে ফিরে যাওয়া নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রায়হান। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইনসের সিলেট জেলা ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার বলেন, ‘সপ্তাহে দুবাইয়ে পাঁচটি ও আবুধাবিতে বিমানের দুটি ফ্লাইট যাচ্ছে। দুবাই ফ্লাইটের টিকিটের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আবুধাবিতে ফ্লাইট কম হওয়ায় ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার থেকে অ্যাপ্রোভাল সিস্টেম তুলে দেওয়ায় আটকা পড়া সব যাত্রী একসঙ্গে যেতে চাইছেন। তাই সংকট আরও বেড়েছে।’ শাহনেওয়াজ বলেন, ‘বুধবার প্রায় দেড় হাজার যাত্রী এসেছিলেন টিকিটের জন্য। টিকিট না পেয়ে তারা বিমান অফিসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। টিকিট সংকটের কারণ তাদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ রাখা হয়েছে। সিট খালি হলেই ক্রমান্বয়ে তাদের সুযোগ দেওয়া হবে।’
