আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটেনে রিসেশন বা অর্থনৈতিক মন্দা ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় ১১ বছর পর ব্রিটেন বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে বলে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস সংক্ষেপে ওএনএস। আগামীতে ব্রিটিশ অর্থনীতির আরও খারাপ সময় আসছে বলেও সতর্ক করেছেন স্বয়ং চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। করোনা শুরুর পর এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে হসপিটালিটি সেক্টরে ব্রিটিশ অর্থনীতির জিডিপি সংকুচিত হয়েছে প্রায় ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। মঙ্গলবার ওএনএস এক রিপোর্টে জানিয়েছে, এই তিন মাসেই প্রায় ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। কিন্তু এই সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছে লেবার পার্টি। করোনার কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ১ মিলিয়নের বেশি মানুষ বেকার হয়েছে বলে দাবি লেবার পার্টির। এদিকে বেকারত্ব এবং আয় কমে যাওয়ার ফলে অনেককেই গিয়ে নির্ভর করতে হয়েছে ইউনিভার্সেল ক্রেডিটের ওপর। জুলাই মাসে ব্রিটেনে ইউনিভার্সেল ক্রেডিট আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ২ দশমিক ৭ মিলিয়নে গিয়ে পৌঁছায়। করোনা লকডাউন শুরুর পর মার্চ থেকে প্রায় ১১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এই আবেদনের সংখ্যা। তবে অর্থনীতির আরও যে দুঃসময় আসছে সেটা স্বীকার করেছেন চ্যান্সেলর নিজেই। গতকাল অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরপরই এক বিবৃতিতে চ্যান্সেলর ঋষি সোনাক বলেন, অর্থনীতির আরও খারাপ সময়ের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশ্লেষকদের ধারণা, ব্রিটিশ অর্থনীতি এবং চাকরি বাজারে বড় ধরনের ঝাঁকুনি খাবে নভেম্বরে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরের শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দেড় লাখ চাকরি ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এসেছে। কিন্তু অক্টোবরে ফারলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গণহারে চাকরি ছাঁটাই শুরু হবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। প্রায় ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন কর্মজীবীকে গত এপ্রিল থেকে তাদের বেতনের ৮০ শতাংশ ফারলো দিয়ে আসছে সরকার। তবে আগস্ট থেকে ৫ শতাংশ পেনশন কন্ট্রিবিশন, সেপ্টেম্বরে এর সঙ্গে ফারলোর ১০ শতাংশ এবং অক্টোবরে আরও ১০ শতাংশসহ সর্বমোট ২০ শতাংশ ফারলো এবং ৫ শতাংশ পেনশন মিলে ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে চাকরিদাতা কোম্পানিকে। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে ২৫ শতাংশের ভার বহন করতে না চাইলে এই দুই মাসেই আরও চাকরি ছাঁটাইয়ের ঘোষণা আসতে পারে। আর নভেম্বরে গিয়ে হয়তো ৯ মিলিয়নের বেশি ছাঁটাইয়ের ঘোষণা আসবে বলে ধারণা তাদের।