শিরোনাম
শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

সিলেটে হঠাৎ জঙ্গি আতঙ্ক, বেড়েছে নজরদারি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে হঠাৎ করে চেপে বসেছে জঙ্গি আতঙ্ক। চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন স্থান থেকে ৬ জঙ্গি ধরা পড়ার পর তৎপরতা বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও। ভুয়া পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে নগরীর কোথাও জঙ্গিরা আস্তানা গড়ছে কিনা এ ব্যাপারে বাড়ানো হয়েছে সতর্কতা। বাসাবাড়ির ভাড়াটেদের তথ্যও নতুন করে যাচাই-বাছাই করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। পাশাপাশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে মাজার, মন্দির ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে। জঙ্গিদের তৎপরতা ও কর্মকান্ডে র জন্য সিলেট সর্বপ্রথম আলোচনায় আসে ২০০৬ সালের ২ মার্চ। টানা ৩৩ ঘণ্টার অভিযান শেষে ওইদিন নগরীর শাপলাবাগের সূর্যদিঘলবাড়ি থেকে আটক করা হয়েছিল তৎকালীন জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে। এরপর হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর ওরসে, একই মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর, আওয়ামী লীগের সভা শেষে গুলশান সেন্টারে, তাঁতীপাড়ায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভায়, টিলাগড়ে সাজু স্মৃতি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও আলোচিত আতিয়া মহলসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা ও গ্রেনেড হামলায় সিলেটে জঙ্গি তৎপরতার ঘটনা আলোচনায় আসে। জঙ্গিদের ছোড়া বোমা ও গ্রেনেডে প্রাণ হারিয়েছেন র‌্যাব, পুলিশ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ অন্তত ৮ জন। আহত হয়ে এখনো স্পিøন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে বেড়াচ্ছেন অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি। ২০১৭ সালের মার্চে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে সিলেটে কমে আসে জঙ্গি তৎপরতা। প্রচারণা চালানোর সময় মাঝে মধ্যে ধরা পড়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরিরের কিছু সদস্য। কিন্তু একসঙ্গে নব্য জেএমবির ‘সামরিক’ ইউনিটের ৫ সদস্য ও এক দিন পর আল্লাহর দলের আরেক সদস্য আটকের পর সিলেটে ফের জঙ্গি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে নব্য জেএমবির সদস্যরা হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে বোমা হামলার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আগাম তথ্য চলে যাওয়ায় ব্যর্থ হয়েছে তাদের মিশন। রক্ষা পেয়েছে সিলেটবাসীও। গত মঙ্গলবার নগরীর মিরাবাজার, টুকেরবাজার ও দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন স্থানে ঢাকা থেকে আসা সিটিটিসির বিশেষ দল ‘নব্য জেএমবি’র পাঁচ সদস্য আটক ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। নগরীর শাপলাবাগের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের নামে তারা ‘সামরিক’ প্রশিক্ষণ দেওয়ারও পরিকল্পনা নিয়েছিল। এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় তালুকদার জানান, নগরীর বাসাবাড়ির ভাড়াটেদের তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে কেউ ভুয়া পরিচয়ে আশ্রয় নিয়েছে কিনা। এছাড়া মাজার, মন্দির, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ যেসব স্থান জঙ্গিরা টার্গেট করতে পারে সেসব স্থানে পোশাকি পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর