শিরোনাম
রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

নতুন অতিথিতে রঙিন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নতুন অতিথিতে রঙিন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা

চারদিক সুনসান। কোথাও নেই দর্শনার্থীর হইহুল্লোড়, শিশু-কিশোরদের দৌড়াদৌড়ি। চারদিকে কেবল সবুজের সামারোহ। প্রকৃতি মেলে ধরেছে আপন রূপ। গাছে গাছে নতুন কুড়ি। প্রকৃতিকে বিরক্ত করছে না কেউ। পুরো আঙিনাই হয়ে উঠেছে সবুজ। প্রাণিকুলের সঙ্গী ছিল নিরিবিলি পরিবেশ। নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশেই বেড়ে উঠছে প্রাণীগুলো। কোলাহলমুক্ত নীরব-নিস্তব্ধ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এমন পরিবেশে বিভিন্ন প্রাণীর কোলজুড়ে এসেছে নতুন অতিথি। অর্ধশত নতুন অতিথিতে রঙিন এখন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ চিড়িয়াখানা।       

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত মধ্য মার্চ থেকে অদ্যাবধি বন্ধ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই খোলা হবে এটি। তবে এ সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন হয়েছে পুরো চিড়িয়াখানার। যোগ হয়েছে বিনোদনের নতুন অনুষঙ্গ। করা হয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। সমৃদ্ধ হয়েছে পশুপাখির সংখ্যা। জানা যায়, গত প্রায় ছয়মাসে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যোগ হয়েছে একটি বাঘ, একটি গয়াল, তিনটি চিত্রা হরিণ, একটি মায়া হরিণ, চারটি ময়ূর, ১০টি টিয়া, ২০টি ঘুঘু, ছয়টি শালিক, চারটি ককাটিয়েল, একটি ঘোড়া, দুটি সজারু, ইন্দোনেশিয়ার সাতটি মুরগি ও ২২টি অজগর সাপের বাচ্চা। তা ছাড়া জেব্রা পরিবারে আসবে নতুন সদস্য। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ৬৬টি প্রজাতির ৬২০টি পশুপাখি আছে। তা ছাড়া গত ১১ মাসে এক কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে জানা যায়। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘করোনার জন্য চিড়িয়াখানা বন্ধ। এখন দর্শনাথীর কোনো ভিড় নেই। কোলাহলমুক্ত শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এই সময়ে চিড়িয়াখানায় অর্ধশত প্রাণীর ঘরে এসেছে নতুন অতিথি। আরও কিছু প্রাণী প্রসবের অপেক্ষায় আছে। নতুন অতিথিতে চিড়িয়াখানা এখন রঙিন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চট্টগ্রামবাসী নতুন এক চিড়িয়াখানা অবলোকন করতে পারবেন।’ তিনি বলেন, করোনার পুরো সময়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে চিড়িয়াখানার আয়তন, ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে দুই হাজার ফুট দৈর্ঘ্যরে দৃষ্টিনন্দন দুটি সিঁড়ি, ২২ লাখ টাকায় নতুন করে প্রস্তুত করা হয়েছে একটি বার্ড জোন, তৈরি করা হয়েছে নতুন একটি কিডস জোন, প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন সম্প্রসারিত অংশে দেওয়া হয়েছে সীমানা দেওয়াল। কেবল গত ১১ মাসেই চিড়িয়াখানার টিকিট বিক্রির এক কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ হয়েছে।’ জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানুষের বিনোদন, শিশুদের শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য নগরের খুলশির ফয়েজ লেকের পাশে ৬ একর জমির ওপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন। দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ইনকিউবেটরে অজগরের ২৬টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানায় আছে দেশের একমাত্র দুর্লভ সাদা বাঘ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আনা হয়েছিল একটি বাঘ ও একটি বাঘিনী। আছে জেব্রা, সিংহ, হরিণ, ভল্লুক, বানর, কুমির। আছে ন্যাচারাল মিনি এভিয়ারি (পক্ষীশালা)। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের পক্ষীশালায় আছে ৬ প্রজাতির ৩০০ পাখি। পাখির মধ্যে আছে, লাভ বার্ড ২০ জোড়া, লাফিং ডাভ ৫০ জোড়া, ফিজেন্ট ১০ জোড়া, রিংনেড পারোট ১০, কোকাটেইল ৫০ ও ম্যাকাও ১ জোড়া। শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে কিডস জোন। দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ পথগুলো।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর